বুধবার , ১৬ জুন ২০২১ | ২রা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
insidebusinessnews.com
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ
  3. অর্থনীতি
  4. আইন-আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. খেলাধুলা
  7. গল্প
  8. জাতীয়
  9. ধর্ম
  10. প্রবাস
  11. ফিচার
  12. বাণিজ্য
  13. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  14. বিনোদন
  15. বিভাগীয় সংবাদ

উন্নয়ন বোর্ডের ২০ লক্ষ টাকার প্রকল্প জলে !

প্রতিবেদক
Newsdesk
জুন ১৬, ২০২১ ৯:২৩ পূর্বাহ্ণ

বাদুলা ত্রিপুরা, ষ্টাফ রিপোর্টার

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড (পা:চ:উ:বো)-এর সঠিক পরিকল্পনার অভাবে ২০ লক্ষ টাকার ব্যয়ে নির্মিত রাঙ্গামাটির রাজস্থলী উপজেলার মিতিঙ্গ্যাছড়ি পাড়া পানি সর্বরাহকরণ প্রকল্পটি অকেজো হয়ে পড়ে আছে। দুই বছর আগে প্রকল্পের কাজ শেষ হলেও তা গ্রামবাসীদের, কোনও কাজেই আসেনি।

রাজস্থলী উপজেলার ১নং ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের ১ ও ২নং ওয়ার্ডের ১৩টি ত্রিপুরা গ্রামের পানি সঙ্কট দীর্ঘদিনের। খাল ও পাহাড়ের ছড়াই একমাত্র খাবার পানির উৎস তাঁদের।তবে,এই পানি ব্যবহারের ফলে প্রায় সময়ই তাদের পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে ভূগতে হয় বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

জানা যায়,বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য অত্র ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মিতিঙ্গ্যাছড়ি পাড়াবাসী ৪ বছর আগে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের বরাবর একটি আবেদন করা হয়। অনেক দৌঁড়-ঝাপ ও অফিসের জটিল প্রক্রিয়া পেরিয়ে অবশেষে সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ অর্থ-বছরে দূর্গম এলাকায় “পানি সরবরাহণকরণ প্রকল্পের” আওতায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড হতে একটি পানি সরবরাহকরণ প্রকল্প বরাদ্দ মেলে তাদের ভাগ্যে। গ্রামের এহেন বিশুদ্ধ পানির চরম সঙ্কটের দিনে, এমন একটি প্রকল্প, গ্রামবাসীদের মনে খুশী জোয়ার বেয়ে যায়। কিন্তু সেদিনের তাঁদের সেই হাঁসি বেশি দিন স্থায়ী হয়নি! 

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়,প্রকল্পের নকশা অনুযায়ী উঁচু পাহাড়ের ছড়ার পানি ধরার জন্য একটা ট্যাংক বা পানির হাউজ তৈরি করা হবে।সেই হাউজ থেকে পাইপের মাধ্যমে গ্রামের বিভিন্ন পয়েন্টে পানি সরবরাহ করা হবে এমনটি উল্লেখ থাকলেও বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে তা বাদ দেওয়া হয়। সবশেষে সিদ্ধান্ত মেলে,রিংওয়েল খুঁড়ে পানির উৎস সৃষ্টি করা হবে। সেখান থেকে সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে সাব মারশিবল পাম্পের সাহায্যে পানির ট্যাংকে পানি জমা করা হবে। আর সেই পানির হাউজ থেকে গ্রামের বিভিন্ন পয়েন্টে পানি সরবরাহ করা হবে।

কিন্তু উন্নয়ন বোর্ডের সেই সিদ্ধান্ত, সিদ্ধান্তই থেকে গেছে। কারণ, রিংওয়েলের পানির স্তর কম থাকায় মোটর চালু করার মিনিট পাঁচেকের মধ্যে পানি শেষ হয়ে যায়। ফলে হাজার চেষ্টাও পানি আর ওঠে না!

পানির মেইন হাউজের একশ গজের কাছেই বাস কৈন্যাতি ত্রিপুরার(৩০)। তিনি জানান, তাঁর বাড়ীর উঠানে পানি সরবরাহের জন্য একটা স্পট করা হলেও আজ অব্দি সেখান থেকে কোনও পানিই পাননি তিনি।

গ্রামবাসীরা জানান,“পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের এ্‌ই প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, প্রকল্প কাজের শুরু থেকেই অনিয়মিত ছিলেন। প্রকল্পের ঠিকাদারের কাজের অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ করলেও তিনি তা গ্রাহ্য করতেন না।” গ্রামের ৬০টি পরিবারের জন্য একটি মাত্র রিংওয়েল খুঁড়ে পানি সংকুলান হবে না বিধায়, অন্তত দুইটি রিংওয়েল খনন করার গ্রামবাসীদের অনুরোধ শুনেননি বলে জানান ওই কর্মকর্তা। উল্টো, গ্রামবাসীদের তিনি পানির স্তর পাওয়া এবং নিচে পাথর থাকায় কাজ করা সম্ভব না বলে বুঝিয়ে কাজ শেষ করেন।

গ্রামবাসীরা মনে করেন, রিংওয়েল খননের সময় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে সঠিক নির্দেশনা দিয়ে গভীর পর্যন্ত খোঁড়ানো গেলে পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যেত! ফলে গ্রামবাসীও পানি পেত।

একই পাড়ার বাসিন্দা বেলাল ত্রিপুরা (৩৫) বলেন, “রিংওয়েল খুঁড়ার সময়টাতে তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন। জানান,যে রিংওয়েলটি খুঁড়া হয়েছিল, তার গভীরতা মাত্র ১০ফুট! ঠিকাদার পাথর থাকার কথা অজুহাত দেখিয়ে আর নিচে খুঁড়েনি। মাত্র ১০ ফুট খুঁড়ে ৬০টি পরিবারের পানি সরবরাহ করা সম্ভব না”।

তিনি আরও জানান,পানি সরবরাহের পাইপও ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের। তাছাড়া,পাইপটি মাটির নিচ দিয়ে দেয়ার কথা থাকলেও তা না করে বরং উপর দিয়ে টেনে নেয়া হয়েছে। তার উপর আবার লাইনের মাঝখানে ছিদ্র হয়ে প্রায়ই পানি পড়ে যায়। ফলে,পানি আর সংগ্রহের স্পটে পৌঁছায় না।

তবে,বিষয়টি নিয়ে প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা পা:চ:উ:বো’র নির্বাহী প্রকৌশলী তুষিত চাকমার সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বলেন, “ আমি নতুন এসেছি। প্রকল্পে কি হয়েছিল তা বিস্তারিত জেনে পরবর্তী পদক্ষেপ নিব।”

সর্বশেষ - অন্যান্য