দহেন বিকাশ ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি।।
খাগড়াছড়ি জেলা সদরে ত্রিপুরা স্টুডেন্টস্ ফোরাম, বাংলাদেশ (টিএসএফ)’র চট্টগ্রাম মহানগর শাখার ১০ম দ্বি বার্ষিক কাউন্সিল ও নবীন বরণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ ২০২১খ্রিঃ) সকাল থেকে খাগড়াছড়ি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট অডিটোরিয়ামে ‘এসো হে নবীন মানসম্মত শিক্ষা গ্রহণ করি, আলোকিত সমাজ গড়ে তুলি’’ প্রতিপাদ্যে ত্রিপুরা স্টুডেন্টস ফোরাম, বাংলাদেশ, চট্টগ্রাম মহানগর শাখার “১০ম দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল” ও ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম মহানগরের বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন কলেজে অনার্স ১ম বর্ষে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের “নবীন বরণ-২০২১” অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও ভাষা চর্চায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদকপ্রাপ্ত মথুরা বিকাশ ত্রিপুরাকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
ত্রিপুরা স্টুডেন্টস ফোরাম, বাংলাদেশ, চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি নয়ন ত্রিপুরার সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক অর্ণব ত্রিপুরা (শশী) এর সঞ্চালনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংক, চট্টগ্রাম’র উপ মহাব্যবস্থাপক দীনময় রোয়াজা।
প্রধান অতিথি বলেন, টিএসএফ সংগঠনটির সাথে আমার রক্তের সম্পর্ক রয়েছে। মৌলিক চাহিদা পূরণ হওয়ার পর মানুষ উচ্চ বিলাসী চিন্তা করে। কিন্তু আমি তা করিনি। দেশ ও সমাজের জন্য কাজ করার মধ্যে স্বার্থকতা আছে। সমাজ ও জাতির উন্নয়নে কাজ করতে ছাত্র ও যুব সমাজক সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। এজন্য প্রয়োজন লিডারশীপ। লিডারশীপ হতে হলে সর্বপ্রথম ত্যাগ, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা থাকা দরকার। প্রতিষ্ঠিত হলে দেশ, সমাজ ও জাতির উন্নয়নে কাজ করার জন্য যুব সমাজের প্রতি আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যান সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অনন্ত কুমার ত্রিপুরা। তিনি বলেন, সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশ ও সমাজের জন্য কাজ করবে। আর সরকারি চাকুরীর আশায় না থেকে তিনি যুব সমাজকে বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষায় প্রশিক্ষিত হয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান জানান।
জাবারাং কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিচালক ও প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদকপ্রাপ্ত মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি বলেন- আমি আজ এ পজিশনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পিছনে টিএসএফ’র অবদান আছে। কেননা টিএসএফ এমন একটা প্লাটফর্ম, যার মাধ্যমে ক্যারিয়া গড়ার সুযোগও রয়েছে। সংগঠনে প্রকৃত কর্মী বাড়লে সমাজ উন্নয়ন করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি আরোও বলেন, নিজেকে জানার পরে সমাজ ও জাতিকে জানার চেষ্টা করতে হবে। কখনো নিজের পরিবার, নিজের সমাজ, নিজের গ্রামের প্রতি অকৃতজ্ঞ না হওয়ারও অনুরোধ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরোও বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল কর্মসূচির চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও বান্দরবান অঞ্চলের জেলা ব্যবস্থাপক ধন রঞ্জন ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের উপ-পরিচালক জীতেন চাকমা, ত্রিপুরা স্টুডেন্টস্ ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি ও শিক্ষা উন্নয়ন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক জয় প্রকাশ ত্রিপুরা, বিশিষ্ট সমাজসেবক দেব ভূষন ত্রিপুরা, ত্রিপুরা স্টুডেন্টস্ ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি প্রেম কুমার ত্রিপুরা প্রমূখ। এসময় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন জেলা, উপজেলা-কলেজ শাখার নেতৃবৃন্দ ও শুভাকাঙ্খীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রথম অধিবেশনে আলোচনা সভার পরে দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়। এতে ২০১৯-২০ মেয়াদ কমিটিদের বিলুপ্ত ঘোষণা করেন শাখা কাউন্সিল সম্পন্ন কমিটির আহবায়ক ও ত্রিপুরা স্টুডেন্টস্ ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হৃদয় ত্রিপুরা। পরে তিনি ২০২১-২২মেয়াদে কার্যনির্বাহী কমিটিদের নাম ঘোষণা করেন। স্নেহময় ত্রিপুরাকে সভাপতি, গুনেন ত্রিপুরাকে সাধারণ সম্পাদক ও পাভেল ত্রিপুরাকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে মোট ২১সদস্য বিশিষ্ট ও শাখার কার্যক্রম আরো গতিশীল করার জন্য ১০জনকে সাধারণ সদস্য করে চট্টগ্রাম মহানগর শাখার কমিটি গঠন করা হয়।
নতুন কমিটিদের শপথ বাক্য পাঠ করান ত্রিপুরা স্টুডেন্টস্ ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি প্রেম কুমার ত্রিপুরা।