রবিবার , ২১ আগস্ট ২০২২ | ২রা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
insidebusinessnews.com
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ
  3. অর্থনীতি
  4. আইন-আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. খেলাধুলা
  7. গল্প
  8. জাতীয়
  9. ধর্ম
  10. প্রবাস
  11. ফিচার
  12. বাণিজ্য
  13. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  14. বিনোদন
  15. বিভাগীয় সংবাদ

স্বর্ণালংকারের ক্রেতা নেই, দিশাহারা কারিগরেরা

প্রতিবেদক
Newsdesk
আগস্ট ২১, ২০২২ ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ

এখন নিত্যপণ্যের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। উল্টো আয় শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে স্বর্ণকারদের।

  • বেড়া উপজেলায় স্বর্ণালংকার তৈরির দুই শতাধিক দোকান রয়েছে।
  • করোনাভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেওয়ায় এক বছরের বেশি সময় স্বর্ণকারেরা প্রায় কর্মহীন ছিলেন। এখন আবার খারাপ আছেন তাঁরা।পাবনার বেড়া উপজেলার স্বর্ণকারদের আয় দিন দিন কমছে। বর্তমানে হাতে তেমন কাজ না থাকায় তাঁরা সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। স্বর্ণকারেরা বলেন, সোনার দাম সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গেছে। এতে ক্রেতার অভাবে তাঁরা স্বর্ণালংকার তৈরির কাজ এখন পাচ্ছেন না বললেই চলে।

    উপজেলা স্বর্ণালংকার ব্যবসায়ী সমিতি সূত্রে জানা যায়, বেড়া উপজেলায় স্বর্ণালংকার তৈরির দুই শতাধিক দোকান রয়েছে। বেড়া বাজার, হাটুরিয়া বাজার, নাকালিয়া বাজার ও রাকশা বাজারে স্বর্ণালংকারের দোকান বেশি। এসব দোকানে এক হাজারের বেশি স্বর্ণকার কাজ করেন। স্বর্ণালংকারের স্বাভাবিক চাহিদা থাকলে স্বর্ণকারেরা প্রতিদিন ৬০০–৭০০ টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকেন। এমন আয়ে কিছুদিন আগেও ভালোভাবেই সংসার চালাতেন তাঁরা। কিন্তু এখন নিত্যপণ্যের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেলে উল্টো আয় শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। অনেকেই ধারদেনা করে অল্প নিত্যপণ্যে কোনোরকমে সংসার চালালেও কেউ কেউ তা-ও পারছেন না।

    স্বর্ণকারেরা বলেন, তাঁদের খারাপ সময় শুরু হয় ২০২০ সালের মার্চ-এপ্রিলের দিকে। করোনাভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেওয়ায় এক বছরের বেশি সময় তাঁদের প্রায় কর্মহীন থাকতে হয়। এরপরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। কিন্তু মাসখানেক হলো তাঁরা করোনাকালীন পরিস্থিতির থেকেও খারাপ আছেন। সোনার দাম সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাওয়ায় ক্রেতারা স্বর্ণ কিনছেন না। দু-তিন সপ্তাহ ধরে তাঁরা একরকম বেকার হয়ে বসে আছেন। এ অবস্থায় সংসার চালাতে গিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন তাঁরা।

    স্বর্ণকার বিশ্বজিৎ কুমার বলেন, ‘বাজারে প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম নাগালের বাইরে। অথচ দোকানে কোনো কাজ না থাকায় আয়রোজগার বন্ধ। হাতে টাকা না থাকায় বাজার-সদাই করার উপায় নেই। এ অবস্থায় পরিবার নিয়ে আমাদের (স্বর্ণকারদের) দিন কাটছে চরম কষ্টে।’

    স্বর্ণালংকার ব্যবসায়ীরা বলেন, বিয়েতেও এখন স্বর্ণালংকার ব্যবহার কমে গেছে। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ছিল ৪৪ থেকে ৪৫ হাজার টাকা। এর পর থেকেই বাড়তে থাকে দাম। ২০২২ সালের শুরুর দিকেও ৬৫ হাজার টাকার কাছাকাছি দামে স্বর্ণ বিক্রি হয়েছে। বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) ১৮ আগস্ট থেকে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করেছে ৮২ হাজার ৫৬ টাকা। ১৮ তারিখের আগে প্রতি ভরির দাম ছিল ৮৪ হাজার ৩৩১ টাকা। স্বর্ণালংকার বিক্রির সময় কারিগরদের মজুরিসহ অন্য খরচ ধরে দাম নির্ধারণ করা হয়।

    বেড়া বাজারের আধুনিকা জুয়েলার্সের মালিক বাবলু কর্মকার বলেন, প্রতিদিনই সোনার দাম বাড়া-কমার মধ্যে আছে। তবে দাম বাড়ার প্রবণতাই বেশি। এ অবস্থায় গয়না তৈরির অর্ডার নিয়ে গত এক মাসে এক লাখ টাকার বেশি লোকসান দিয়েছেন। বাধ্য হয়ে এখন আর কোনো গয়না তৈরির অর্ডার নিচ্ছেন না। তা ছাড়া অর্থনৈতিক সংকটের কারণে মানুষ গয়না বানাতে আসছেন না বললে চলে।

    বেড়া বাজারের স্বর্ণকার রঞ্জন কর্মকার বলেন, ‘এ দুরবস্থার মধ্যে আমাগরে খবর কেউই নেয় না। অথচ নানা পেশার মানুষের মধ্যে আমরাই সবচেয়ে কষ্টে আছি। আমাগরে মধ্যে অনেকে ঠিকমতো বাজারও করতে পারেন না।’

    উপজেলা স্বর্ণালংকার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক গৌর কর্মকার বলেন, স্বর্ণালংকার ব্যবসায়ীসহ স্বর্ণকারদের এমন দুঃসময় আর কখনো আসেনি। সারা দিন দোকান খুলে রেখেও ক্রেতার দেখা মিলছে না। এ অবস্থায় স্বর্ণালংকারের দোকান ও কারখানা বন্ধ হতে শুরু করেছে।

সর্বশেষ - অন্যান্য