গত কয়েকবছর ধরে আলোচনার পর এবার বাস্তবে রূপ নিচ্ছে ভারতের গ্রিড লাইন ব্যবহার করে নেপাল থেকে বাংলাদেশে জলবিদ্যুৎ আমদানির উদ্যোগ।
মঙ্গলবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ কেনার প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতি ইউনিটের দাম পড়বে আট টাকা ১৭ পয়সা, যা বাংলাদেশের বাস্তবতায় তুলনামূলক সস্তা।
আগামী পাঁচ বছরের জন্য আনা হবে নেপালের ওই বিদ্যুৎ, তবে এরপরেও প্রয়োজন হলে সময় বাড়ানো হবে। ভারতের জাতীয় গ্রিড ব্যবহার করে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার আন্তঃদেশীয় গ্রিড লাইন হয়ে দেশে ঢুকবে নেপালের ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার বিভাগের সচিব মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, প্রতি বছর আনুমানিক ১৩০ কোটি টাকা হিসাবে এই বিদ্যুৎ কিনতে পাঁচ বছরে খরচ হবে ৬৫০ কোটি টাকা।
মন্ত্রিসভায় ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন করা হলে তিন দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিক চুক্তি এখনো হয়নি। মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হবে। কারণ, বিদ্যুৎ নেপালের, আসবে ভারতের সঞ্চালন লাইন হয়ে।
এক প্রশ্নে তিনি বলেন, সম্ভবত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেপাল সফরের কথা রয়েছে। সেখানেই হয়ত এই চুক্তি হবে।
নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আনতে তিন ধরনের দাম পড়বে। এরমধ্যে রয়েছে ভারতের মোজাফফরবাদ সাবস্টেশন পর্যন্ত বিদ্যুতের দাম, ভারতের ট্রেডিং মার্জিন এবং ট্রান্সমিশন চার্জ।
এই তিন ধরনের মূল্যের মধ্যে মোজাফফরবাদ পর্যন্ত প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পড়বে ছয় দশমিক ৪০ ইউএস সেন্ট, আর ভারতের ট্রেডিং মার্জিন হবে দশমিক ০৫৯৫ রুপি।
তবে ট্রান্সমিশন চার্জ এখনও ফাইনাল হয়নি এবং ভারতের বিধিবিধান অনুযায়ী এটা ঠিক হবে বলে জানান সচিব মাহমুদুল হোসাইন খান।
প্রায় ছয় বছর আগে বিদ্যুৎ আমদানির জন্য নেপালের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে বাংলাদেশ। ২০১৮ সালে একটি সমঝোতা সই করা হয়। কিন্তু ভারতীয় গ্রিড লাইন ব্যবহার করার প্রয়োজন হওয়ায় ত্রিপক্ষীয় সমঝোতায় বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়টি ঝুলে যায়।
নানা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে অবশেষে গত বছরের শেষের দিকে জলবিদ্যুৎ আমদানির বিষয়টি অনুমোদন পায় অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে।