পৃথীবিতে যেখানে একটি সন্তানের সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়স্থল মায়ের কোল, সেখানে সেই সন্তানকে আগলে রাখতে হেরে গেলেন মা। অভাব অনটনের সংসারে শেষমেষ মা-ই ছেলেকে বিক্রির জন্য নিয়ে গেছেন হাটে। ঘটনাটি ঘটেছে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভাইবোনছড়া ইউনিয়নে।
সদর উপজেলার বাজারে ওই মা তাঁর সন্তানের দাম হেঁকেছিলেন ১২ হাজার টাকা। ছয় বছর বয়সে যেখানে মায়ের পরম স্নেহ পাওয়ার কথা, সেখানে অভাব অনটনের সংসারে দিন কাটছে খেয়ে না খেয়ে। গোয়াল ঘরের পাশের ছোট্ট একটি ঘরেই ঠাঁই তাঁদের। অভাবের সংসারে যেখানে নিজের পেটে ভাত জোটে না, সেখানে ছয় বছরের ছেলের কষ্ট সইতে না পেরে হাটে নিয়ে যান বিক্রির উদ্দেশ্যে। দর কষাকষির সময় প্রশাসনের নজরে পড়ে শেষমেষ মায়ের কোলই হলো ওই সন্তানের ঠিকানা।
এলাকাবাসী বলছেন, ‘অভাবের কারণে খাগড়াছড়ির হাট-বাজারে ছেলেকে বিক্রির জন্য গিয়েছিলেন। পরে বাচ্চা নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হয়। কারও সঙ্গে যেন এমন ঘটনা না ঘটে।’
ভাইবোনছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুজন চাকমা বলেন, ‘অভাবের তাড়নায় যে ছেলেকে জন্ম দিয়েছিলেন, সেই ছেলেকে তিনি ১২ হাজার টাকা দিয়ে বিক্রি করতে চেয়েছিলেন। উনার পাশে দাঁড়ানো দরকার। ব্যক্তিগতভাবে যেটুকু সহায়তা করা যায়, করব। পাশাপাশি সরকারকেও এ বিষয়ে এগিয়ে আসার জন্য আমার অনুরোধ থাকবে।’
পার্বত্য চট্টগ্রাম আসনের সংরক্ষিত সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা বলেন, ‘আমরা সরেজমিনে বিষয়টি দেখেছি। আমাদের যতটুকু করণীয়, আমরা অবশ্যই করব। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করব ওই পরিবারটিকে ভালোভাবে রাখার জন্য।’
এদিকে, ওই সন্তানের ভবিষ্যত সুরক্ষায় সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা চেয়েছেন স্বজনেরা।