সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডের ছবি ঝিনাইদহের স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে পাঠানোর যে খবর বেরিয়েছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিবি কার্যালয়ে হারুন বলেন, সংসদ সদস্য আনারকে হত্যার পর আসামিরা কার কার কাছে শেয়ার করেছেন তা তদন্ত চলছে। ছবি দিয়ে কেউ আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছে কি না, কাদের মাধ্যমে লাভবান হয়েছে, সব বিষয় তদন্ত করে বের করা হচ্ছে।
ঝিনাইদহের আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকে নজরদারিতে রাখছেন, একজনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডেও এনেছেন– এমন প্রশ্নের জবাবে ডিবিপ্রধান হারুন বলেন, মামলাটি তদন্তাধীন। বাংলাদেশে ও ভারত মিলে দুটি মামলা হয়েছে। দুই দেশেরই উদ্দেশ্য অভিন্ন। আমরা কাজ করছি। আসামির সঙ্গে আমরা কথা বলেছি।
আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডের পরই স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতাকে নিয়ে আকার ইঙ্গিতে নানা জল্পনা ছড়িয়ে পড়ে। বৃহস্পতিবার রাতে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমদ ওরফে গ্যাস বাবুকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারকে নির্মমভাবে খুনের ঘটনার রহস্য ডালপালা মেলছে।
হুন্ডি ও চোরাচালানের অর্থের ভাগাভাগিতে আনার খুন হয়েছেন- বিভিন্ন গণমাধ্যমে এমন সংবাদ প্রকাশিত হলেও জেলা আওয়ামী লীগের নেতা গ্যাস বাবু গ্রেপ্তারের পর এই হত্যাকাণ্ড রাজনৈতিক কিনা তা নিয়ে জল্পনা চলছে।
এরইমধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, আনার হত্যাকাণ্ডের তদন্ত শেষ হলে অনেকেই গ্রেপ্তার হতে পারেন।
মঙ্গলবার রাজধানী থেকে আনার হত্যাকাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সাইদুল করিম মিন্টুকে আটক করে ডিবি।
বিকেলে ডিবি কার্যালয়ে হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা সব তথ্য-উপাত্ত বিচার-বিশ্লেষণ করে মনে করেছি, ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। এ জন্য তাকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে এনেছি। তার রিমান্ড চলছে, তাকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করছি। ঘটনা ডিবি-ওয়ারী বিভাগ তদন্ত করছে।
হত্যাকাণ্ডের পর দুই কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে কিনা প্রশ্নে হারুন বলেন, এগুলো আমরাও শুনেছি, সবকিছু তদন্ত করছি। হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড আক্তারুজ্জামান শাহীন বাংলাদেশ থেকে দিল্লির পর কাঠমান্ডু, এরপর দুবাই থেকে যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেছে। তাকে আমরা ধরতে না পারলেও মোটামুটি বাকি সব আসামির বিষয়ে জানতে পেরেছি। আসামিদের অনেককেই গ্রেপ্তার করেছি। ভারতে জিহাদ গ্রেপ্তার হয়েছে। এছাড়া কাঠমান্ডু থেকে গ্রেপ্তার সিয়ামকে ভারতে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রয়োজন মনে করলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে সিয়ামকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে যাবো।