ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মো. আবদুস সোবহান মিয়া (গোলাপ) তাঁর নির্বাচনী হলফনামায় যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ি কেনার কথা উল্লেখ করেননি। এ বিষয়ে তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না সে প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশন বলছে, এখন তাদের আর কিছু করার নেই।
মাদারীপুর–৩ আসনের সংসদ সদস্য আবদুস সোবহান আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ৪০ লাখ ডলার ব্যয়ে একাধিক বাড়ি কিনেছেন বলে খবর প্রকাশ করেছে অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক ‘অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট’ বা ওসিসিআরপি।
গত শুক্রবার তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মো. আবদুস সোবহান মিয়া ২০১৪ সালে প্রথম নিউইয়র্কে অ্যাপার্টমেন্ট কেনা শুরু করেন। ওই বছর নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস এলাকায় একটি সুউচ্চ ভবনে অ্যাপার্টমেন্ট কেনেন তিনি। পরের পাঁচ বছরে তিনি নিউইয়র্কে একে একে মোট ৯টি প্রপার্টি বা সম্পত্তির (ফ্ল্যাট বা বাড়ি) মালিক হন। এসব সম্পত্তির মূল্য ৪০ লাখ ডলারের বেশি (ডলারের বর্তমান বিনিময় মূল্য অনুযায়ী প্রায় ৪২ কোটি টাকা)।
২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে আবদুস সোবহান যে হলফনামা জমা দিয়েছেন, সেখানে যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর সম্পদের বিষয়ে কোনো তথ্য উল্লেখ নেই। এ নিয়ে আলোচনা–সমালোচনার মধ্যে আজ রোববার সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। জবাবে তিনি বলেন, ‘কেউ ভুল বা মিথ্যা তথ্য দিলে নির্বাচনের আগে সেটা কেউ চ্যালেঞ্জ করলে, কমিশন তা যাচাই–বাছাই করে ব্যবস্থা নিতে পারে। তবে কেউ নির্বাচিত হয়ে যাওয়ার পর এ বিষয়ে ইসির কিছু করার নেই।’
এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বা আদালত যদি তথ্য গোপনসংক্রান্ত কোনো প্রমাণ ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে ইসিকে জানান, তখন আইন অনুযায়ী তাঁরা ব্যবস্থা নেবেন।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, ইসির কাজ প্রার্থী যে হলফনামা দেবেন সেটি প্রকাশ করা। হলফনামার তথ্য যাচাই-বাছাই করার ক্ষমতা ইসিকে দেওয়া হয়নি। তবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় কেউ চ্যালেঞ্জ করলে ইসি তা যাচাই-বাছাই করে দেখবে। যাচাই-বাছাইয়ে যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল হবে। এটুকু ক্ষমতা ইসির আছে। এরপর যদি হয়, তাহলে প্রতারণা করেছেন, প্রতারণার মামলা হবে। এই ধারার শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন আদালত। আদালত ব্যবস্থা নিয়ে জানালে ইসি ব্যবস্থা নেবে।