সোমবার , ১ মার্চ ২০২১ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
insidebusinessnews.com
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ
  3. অর্থনীতি
  4. আইন-আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. খেলাধুলা
  7. গল্প
  8. জাতীয়
  9. ধর্ম
  10. প্রবাস
  11. ফিচার
  12. বাণিজ্য
  13. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  14. বিনোদন
  15. বিভাগীয় সংবাদ

আলীকদমে বসতঘরসহ ধর্মীয় উপাসনালয় গীর্জা ভেঙ্গে দিলো – বন বিভাগ।

প্রতিবেদক
Newsdesk
মার্চ ১, ২০২১ ৬:০৮ অপরাহ্ণ

আলীকদম (বান্দরবান) প্রতিনিধি।

বান্দরবানের আলীকদম উপজেলা ৪ নং কুরুকপাতা ইউনিয়নের ১ ওয়ার্ড অভিরাম মেম্বার এলাকায় পাড়াবাসীর অর্থায়নে নির্মানাধীন একটি ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উপাসনালয় গির্জা এবং ২টি বাড়ী ভেঙ্গে দিয়েছে লামা বন বিভাগ।

বৃহস্প্রতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে ১১ টার সময় লামা বন বিভাগ থেকে পাঠানো বন টিমের স্পেশাল টহল বাহিনীর প্রধান(ওসি) মোঃ আতিকুল ইসলাম ও মাতামূহুরী সংরক্ষিত বনের রেঞ্জ কর্মকর্তা জহির উদ্দিন মোঃ মিনার চৌধুরীর নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটায় বলে অভিযোগ করেন সাথীরাম ত্রিপুরা পাড়ার কারবারী ও পাড়া বাসীরা।

বন বিভাগ কর্মীরা গীর্জাঘর সহ বসতঘর ভেঙ্গে দেওয়ার পর অসহায় হয়ে বসে আছে পাড়াবাসী। ছবি: খোলাবার্তা।

সাথী রাম ত্রিপুরা পাড়ার মাইকেল ত্রিপুরা, আব্রাহাম ত্রিপুরা, জগৎ ত্রিপুরা ত্রিপুরা, পিতর ত্রিপুরা ও পাড়া কারবারী সাথীরাম ত্রিপুরার সাথে কথা বলে জানা গেছে , বৃহস্প্রতিবার (২৫ফেব্রুয়ারী) সকাল সাড়ে ১১ ঘটিকার সময় লামা বন বিভাগের মাতামূহুরী রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা জহির উদ্দিন মোঃ মিনার চৌধুরী ও লামা বনবিভাগ থেকে আগত বনটিমের বিশেষ টহল বাহিনীর প্রধান (oc) মোঃ আতিকুল ইসলামসহ আরো ৮থেকে ১০জন লোক এসে পাড়াবাসীদের কাউকে কিছু না জানিয়ে পাড়ার একমাত্র ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান পুরাতন ভবন কে পুনরায় নতুন করে নির্মিত গির্জাটি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে । এ সময় পাড়ার লোকজন পাহাড়ে জুম ক্ষেতে কাজ করছিলো। পাড়ায় যখন প্রাপ্ত বয়স্ক লোকজন ছিলোনা তখন বন বিভাগের লোকজন এসে আমাদের গির্জাটি ভেঙ্গে দিয়েছে বলে পাড়াবাসীদের অভিযোগ।

এই ঘটনায় পাড়াবাসীর পক্ষ থেকে আলীকদম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সায়েদ ইকবাল, উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মংব্রাচিং মার্মা ও জেলা পরিষদ সদস্য ধুংড়ি মং মার্মাকে মৌখিক ভাবে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে বলে জানান পাড়াবাসীরা।

শুক্রবার এ ঘটনায় সরজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন, আলীকদম উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মংব্রাচিং মার্মা, বান্দরবান জেলা পরিষদ সদস্য ধুংড়ি মং মার্মা, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি সমরঞ্জন বড়ুয়া, আলীকদম ত্রিপুরা কল্যান সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফিলিপ ত্রিপুরা। এ ব্যাপারে বান্দরবান জেলা পরিষদের সদস্য ধুংড়ি মং মার্মা জানান,আলীকদমের কুকপাতা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে অবস্থিত সাথীরাম ত্রিপুরা পাড়ার নির্মানাধিন একটি গীর্জা ও ২টি ঘর গতকাল লামা বনবিভাগের লোকজন এসে ভেঙ্গে দিয়েছে। তাদের সাথে ছিলেন, মাতামূহারী রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা। বিষয়টি খুবই দুঃখ্যজনক। আমি তীব্র নিন্দ্রা জানাচ্ছি এবং পাড়াটি অনেক পুরাতন । তারা নির্মাধীন গির্জা ভেঙ্গে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে।

আলীকদম ত্রিপুরা কল্যান সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফিলিপ ত্রিপুরা জানান, গির্জা ভেঙ্গে বন বিভাগ আমাদের খ্রিষ্ঠান ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে। আমরা এ গর্হিত ঘটনার সুষ্ঠ বিচার দাবী করছি। বিষয়টি নিয়ে কুকপাতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ক্রাতপুং ম্রো ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বনবিভাগের নেতৃত্বে গির্জা ভাঙ্গা কোন ভাবেই ঠিক হয়নি। তারা অন্যায় করেছে। তারা সঠিক স্হানে কাজ করছে না।

কুকপাতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ক্রাতপুং ম্রোর অভিযোগ, মাতামহুরী রির্জাভ এলাকায় প্রচুর পরিমাণে পাথর উত্তোলন, বালু উত্তোলন হচ্ছে সে দিকে অভিযান না চালিয়ে তারা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে এসে অভিযানের নাম করে ভেঙ্গেছে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, আমি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং সুষ্ঠ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্হা গ্রহনের জন্য প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে লামা বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস এম কায়সার জানান, আমরা কোন গির্জা ভাঙ্গিনি। আমরা সংরক্ষিত বনে অবৈধ স্থাপনা ভেঙ্গেছি মাত্র। মাতামূহুরী রিজার্ভে কোন স্থাপনা তৈরী করতে বন বিভাগের অনুমতি লাগে। তারা কোন আমার কাছ থেকে কোন অনুমতি নেয়নি। তিনি এ সময় আরো জানান, তিন চারটি ত্রিপুরা ঘর নিয়ে গির্জা তৈরী করার কোন প্রয়োজন নেই।

অন্যদিকে পাড়া কারবারী সাথীরাম ত্রিপুরা বলেন,”বিদ্যামনি ত্রিপুরা পাড়া ও সাথী রাম ত্রিপুরা পাড়ার লোকজনের একমাত্র গির্জা হলো এটি। দুই পাড়ার লোকজন গির্জায় এসে প্রার্থনা করে। আগের বাঁশের বেড়ার ছিলো গির্জাটি। সে কারণে আমরা দুইপাড়ার লোকজন দীর্ঘ ১৫ বছর অর্থ সঞ্চয় করে পাড়া থেকে দশহাত দূরে এ গির্জাটি তৈরী করছিলাম।”

এ ব্যাপারে আলীকদম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সায়েদ ইকবাল বলেন, “বিষয়টি নিয়ে গ্রামবাসীদের লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সর্বশেষ - অন্যান্য