অবরোধের সমর্থনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মিছিল-সমাবেশ করেছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। সমাবেশ থেকে সরকারকে পদত্যাগের দাবি জানান নেতারা। সেই সাথে একতরফা তফসিল ঘোষণা থেকে ইসিকে সরে আসতেও বলেন তারা।
এক ব্রিফিংয়ে বিএনপি নেতা রুহুল কবীর রিজভী দাবি করেন, গেলো পনেরো দিনে দশ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে।
পাশাপাশি রোববার অবরোধের সমর্থনে বিজয় নগর থেকে প্রেসক্লাব পর্যন্ত মিছিল করেছে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাকর্মীরা। একই সময়ে লিবালের ডেমোক্রেটিক পার্টি এলডিপি; বারো দলীয় জোট, গণতন্ত্র মঞ্চ এবং গণ ফোরামও মিছিল বের করেছে।
মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জনদাবি মেনে সরকারকে পদত্যাগের আহ্বান জানান দলগুলোর নেতারা। সেই সাথে নির্বাচন কমিশনকে এক তরফা তফশিল ঘোষণা থেকে বিরত থাকার দাবিও করেন তারা।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাউয়ুম বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এই সরকারকে উৎখাতের মধ্য দিয়ে তাদের লালসা চিরতরে উচ্ছেদ করবে।
গণ সংগতি আন্দোলনের সভাপতি জোনায়েদ সাকি বলেন, একতরফা তফলিস ঘোষণা করলে জনগণের কাঠগড়ায় আপনাদের দাঁড়াতে হবে। কেউ রেহাই পাবেন না।
মতিঝিলে অবরোধের পক্ষে বিএনপির মিছিলে নেতৃত্ব দেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। একই দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মিছিল করে ছাত্রদল। হাজারীবাগে মিছিল করে স্বেচ্ছাসেবক দল। এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় যুবদল কৃষক দল ও মহিলা দলের নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল করে।
পরে সংবাদ সম্মেলনে যুক্ত হয়ে বিএনপির মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকার পতন নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে ।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, র্যাব-পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের না পেলে তাদের পিতা-মাতাসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে।
২৮ অক্টোবর থেকে পনেরো দিনে প্রায় দুইশ’ মামলায় বিএনপির দশ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে কারাগারে নেয়ার দাবি করেন রিজভী। এদিকে টানা ১৫ দিন ধরে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয় বন্ধ রয়েছে। মূল ফটকের দুই পাশে কাঁটাতারের বেড়া। প্রহরায় আছে পুলিশ। আর সড়কে টহল দিচ্ছে র্যাব ও বিজিবি।
সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ ডাকে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্যে সেই সমাবেশ থেকে ২৯ অক্টোবর হরতাল ডাকে দলটি।
একদিন বিরতি দিয়ে ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর সারা দেশে অবরোধ করে তারা। আলাদা কর্মসূচি দিয়ে সঙ্গে যোগ দেয় যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত জামায়াত। এছাড়া বিএনপির সঙ্গে আন্দোলনে থাকা কয়েকটি দলও একই কর্মসূচি দেয়। সেই অবরোধ শেষে গত রোব ও সোমবার নতুন করে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ ডাকা হয়।
গত সোমবার তৃতীয় দফায় টানা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের ঘোষণা দেয় বিএনপি ও সমমনা দলগুলো।
এখন চলছে চতুর্থ দফার অবরোধ কর্মসূচি। রোববার সকাল ছয়টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে।
২৮ অক্টোবর সমাবেশের দিন থেকে অবরোধ কর্মসূচির শুরুর পর থেকে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রামসহ সারা দেশের বিভিন্ন সড়কে বাস, ট্রাক, অটোরিকশায় আগুন দেওয়ার এবং ভাঙচুর করার খবর এসেছে।