‘দেশের মানুষ বেহেশতে আছে’ এমন মন্তব্য নিয়ে সমালোচনার ঝড় থামতে না থামতেই ফের বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে তোপের মুখে পড়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরের জেএমসেন হলে জন্মাষ্টমী উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বক্তব্য দেন। তার সেই বক্তব্য এখন ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’।
বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারকে টিকিয়ে রাখতে ভারত সরকারকে অনুরোধ করেছেন বলে জানান। তিনি বলেন, ‘আমি ভারতে গিয়ে বলেছি, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে। শেখ হাসিনা আমাদের আদর্শ। তাকে টিকিয়ে রাখতে পারলে আমাদের দেশ উন্নয়নের দিকে যাবে এবং সত্যিকারের সা¤প্রদায়িকতামুক্ত, অসা¤প্রদায়িক একটা দেশ হবে শেখ হাসিনার সরকার টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, আমি ভারতবর্ষের সরকারকে সেটা করতে অনুরোধ করেছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের এমন মন্তব্য নিয়ে বিতর্কের ঝড় বইছে। দেশের সর্বত্রই এ বক্তব্য নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা-বিতর্ক চলছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তথা ফেসবুক, ব্লগ, টুইটার, ইউটিউবে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে মন্তব্য, প্রতিবাদ, কথন, সমালোচনা হচ্ছে।
ফেসবুকে সমালোচনা করে কাজী আবু বকর নামে এক পাঠক লিখেছেন, ‘‘বাংলাদেশের জনগণের প্রতি তাদের কোন আস্থা নেই বিশ্বাস নেই জনগণের কাছে কোন দায়বদ্ধতা নেই। তারা বুঝতে পেরেছে সামনে যদি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় তারা জীবনেও ক্ষমতায় যেতে পারবেনা সেজন্য দাদা বাবুদের সাহায্য চাই। কতটুকু নৈতিকতা হারিয়ে থাকলে নৈতিকতার বিপর্যয় হলে এসব কথা বলতে পারে একজন মন্ত্রী।’’
নাজির আহমেদ মুজাহিদ লিখেছেন, ‘‘তিনি সত্য কথাগুলি অকপটে স্বীকার করেছেন। তার জন্যে মোমেন সাহেবকে ধন্যবাদ। লুকোচুরি ভালো না। এভাবেই সব সত্য অনায়াসে প্রকাশ করার অনুরোধ রইল।’’
নুরা ইহসাস বিস্ময় প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘‘আচ্ছা বিরোধীদলীয় কোন নেতা যদি পাকিস্তানের কাছে তাদের নেতাকে ক্ষমতায় আনার জন্য সহযোগিতা চাইতো প্রকাশ্যে তাহলে এতক্ষণে দেশে কি হইতো আমার তো মনে হয় তাদের বাড়িতে হামলা শুরু হয়ে যেত।’’
মনিরুল হাসান তুহিন লিখেছেন, ‘আফসোস হয়, বৈধ হোক অবৈধ হোক একটি সরকার ১৩ বছর ক্ষমতায় থেকে দেশের জনগণের সাথে সম্পর্ক গড়তে পারেনি! ক্ষমতায় থাকার জন্য অন্য একটি দেশকে আহবান করে নিজ দেশে হস্তক্ষেপ করার জন্য! এটা জাতি হিসেবে আমাদের কাছে খুবই লজ্জার ব্যাপার!’’
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ কে আব্দুল মোমেনের ‘ভারত-বাংলাদেশ স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক, বিএনপিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আনতে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ চাওয়া, রাষ্ট্রহীন অবস্থায় আমেরিকা তাকে আশ্রয় দেয়ায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ, প্রবাসীরা দেশে এলে নবাবদাজা হয়ে যায়, গুম হওয়াদের অনেকের ভূমধ্যসাগরে সলিলসমাধি হয়েছে, ঢাকায় কর্মরত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত কিছুই জানেন না’সহ অসংখ্য অপ্রত্যাশিত মন্তব্য করেছেন।