বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম ‘স্থিতিশীলভাবে কমলে’ দেশেও দাম সমন্বয় করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, “বর্ষাকালে যখন বৃষ্টি হয় পুকুরে পুঁটি মাছ খুব লাফায়, পুঁটি মাছের সাথে মলা মাছও খুব লাফায়। এখন বিএনপির লাফালাফি হচ্ছে পুঁটি আর মলা মাছের লাফানির মত। তেলের দাম বাড়াতে ওরা একটু লাফাচ্ছে।
“রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হবার পর সমগ্র পৃথিবীতে তেলের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। ৬০ ডলারের তেল ১৭০ ডলারে গিয়েছে। এখন সেটি ১৩৮-১৪০ ডলার। দ্বিগুণের চেয়ে বেশি। আমাদের দেশে আমরা তেলের দাম দ্বিগুণ করি নাই। সবমিলিয়ে ৩৮-৪০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। আমরা বাড়িয়ে পশ্চিমবাংলার সমান করেছি।”
তিনি বলেন, “বিশ্ববাজারে যদি তেলের দাম স্থিতিশীলভাবে কমে তাহলে আবার তেলের দাম সমন্বয় করা হবে। তাই বিএনপির এই পুঁটি ও মলা মাছের মত এত লাফালাফির কোনো প্রয়োজন নেই।”
বিএনপির ‘পেট্টোলবোমা সন্ত্রাসীরা’ মাঠে নেমেছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, তাদের তাড়িয়ে দিতে হবে এবং প্রতিরোধ করতে হবে। বিএনপির সমাবেশে আমরা কখনও বাধা দিইনি, দেবওনা। কাগজে দেখলাম বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব বলেছেন সরকার নাকি কোন সমাবেশে বাধা দিচ্ছে না বিদেশীদের চাপে।
“সমাবেশ ডাকলে যারা নিজেরাই চেয়ার ছোঁড়াছুড়ি করে, নিজেরা মারামারি করে সমাবেশ পণ্ড করেন, সেখানে বাধাতো আমাদের দেয়ার দরকার নাই। ভবিষ্যতেও দেখবেন যখনই বিএনপি সমাবেশ ডাকবে তখনই নিজেরা সমাবেশ ডেকে নিজেরা সমাবেশ পণ্ড করে দিবে। কিন্তু যদি পেট্টোলবামা বাহিনীদের দেখি তখন কিন্তু আমরা বসে থাকব না, আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলব।”
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী জিয়াউর রহমান ও তার পরিবার মন্তব্য করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার প্রসিডিং সংরক্ষিত আছে। সেই মামলার প্রসিডিংয়ে আসামি এবং সাক্ষীরা তাদের জবানবন্দিতে সবিস্তারে বলেছেন কখন কোথায় কিভাবে জিয়াউর রহমানের সাথে দেখা করেছিল, তিনি কীভাবে ষড়যন্ত্রের সাথে যুক্ত ছিল।
“এবং বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর মেজর জেনারেল সফি উল্লাহকে সরিয়ে দিয়ে জিয়াউর রহমানকে সেনাবাহিনী প্রধান করেন খোন্দকার মোস্তাক। খোন্দকার মোস্তাকের অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহচর না হলে, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের অন্যতম কুশীলব না হলে জিয়াউর রহমানকে কেন সেনাবাহিনী প্রধান করা হয়?“
তথ্যমন্ত্রী বলেন, “বন্দুকের নল থেকে নির্গত দল হচ্ছে জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপি। তিনি বন্দুকের নল উঁচিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিল, ক্ষমতা দখল করে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে বিএনপি গঠন করেছিল।
“সেই ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট গ্রহণ করার জন্য মির্জা ফখরুল, খন্দকার মোশাররফ, গয়েশ্বর বাবুসহ যারা যোগদান করেছিল তারাই হচ্ছে বিএনপির বড় বড় নেতা। তারা সবাই রাজনীতির কাক।”
রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার এডভোকেট নুরুচ্ছফা তালুকদার অডিটোরিয়ামে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার ও যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সহ সভাপতি আবদুল মোনাফ সিকদার।