মানহীন ও পচা খাবার পরিবেশনের অভিযোগে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীমউদ্দীন হলের ক্যানটিন বন্ধ করে দিয়েছে হল কর্তৃপক্ষ। শিগগিরই ক্যানটিনে নতুন ব্যবস্থাপক নিয়োগ ও খাবারের মানের তদারকি জোরদার করার কথা জানিয়েছেন হলের প্রাধ্যক্ষ মুহাম্মদ আবদুর রশীদ।
আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর হলের একদল শিক্ষার্থী নিম্নমানের খাবার পরিবেশনের অভিযোগ তুলে হল ক্যানটিনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। পরে সেখানে যান হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সুমন খলিফা ও সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান। একপর্যায়ে হল প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষকেরাও ক্যানটিনে যান।
হলের একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ক্যানটিনে নিম্নমানের খাবার পরিবেশন করা হচ্ছিল। বারবার খাবারের মানোন্নয়নের অনুরোধ করা হলেও ক্যানটিন ব্যবস্থাপক তা আমলেন নেননি। এ নিয়ে হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। এরই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে আজ। জুমার নামাজের পরে শিক্ষার্থীরা ক্যানটিনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। খাবারের মানোন্নয়নে শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে ছাত্রলীগের হল শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক একাত্ম হন। হল প্রশাসন ও ছাত্রলীগের নেতারা ক্যানটিনে গিয়ে খাবারের মান যাচাই করে শিক্ষার্থীদের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন। পরে প্রাধ্যক্ষ ক্যানটিন বন্ধ করে দেন।
কবি জসীমউদ্দীন হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সুমন খলিফা বলেন, ‘ক্যানটিনের খাবারের মান খারাপ হওয়ায় জুমার নামাজের পর শিক্ষার্থীরা ক্যানটিনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। খবর পেয়ে আমি ও হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান ক্যানটিনে যাই। সেখানে গিয়ে আমরা দেখতে পাই, চাল মেয়াদোত্তীর্ণ ও পোকায় কাটা। ডাল পচা, আটা নষ্ট, তেল নষ্ট, মাংসও বহুদিন আগের। আমরা ক্যানটিনে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই হল প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষকেরা ক্যানটিনে আসেন। অভিযোগের সত্যতা পেয়ে হল প্রাধ্যক্ষ ক্যানটিন বন্ধ করে দিয়েছেন।’
শিক্ষার্থীদের জন্য আপৎকালীন ব্যবস্থা হিসেবে হল প্রশাসন ও ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে হলের দোকানদারদের খাবার বিক্রির অনুরোধ করা হবে বলে জানান সুমন খলিফা।
জসীমউদ্দীন হলের প্রাধ্যক্ষ মুহাম্মদ আবদুর রশীদ বলেন, ‘ক্যানটিনে মানহীন খাবার পাওয়া গেছে। চালে পোকা ছিল। এমন মানহীন ও পচা খাবার তো আমরা শিক্ষার্থীদের খাওয়াতে পারি না, খাবার নিয়ে ছিনিমিনি করতে দেওয়া যায় না। মানের বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে ক্যানটিন ব্যবস্থাপককে সতর্ক করা হচ্ছিল। কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হচ্ছিল না। তাই ক্যানটিনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই নতুন ক্যানটিন ব্যবস্থাপক নিয়োগ করা হবে। ক্যানটিনে প্রশাসনের তদারকির পাশাপাশি ছাত্রদের মধ্য থেকেও একটি দল গঠন করে দেওয়া হবে, যাতে বিষয়টি সব সময় তদারকির মধ্যে থাকে।’