ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে বিভিন্ন এলাকায় নেতাকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে দেশের সব জেলা শহর ও মহানগরে জনসমাবেশের ডাক দিয়েছে বিএনপি। সোমবার দলটি এই সমাবেশ করবে।
শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এসময় মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা রোববার কর্মসূচি দিতাম। কিন্তু আমরা জানতে পেরেছি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এদিন বিক্ষোভ করবে। তাই আমরা পরেরদিন এই কর্মসূচি পালন করবো।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, বিনা উসকানিতে বিএনপি নেতাকমীদের ওপর নির্বিচানে গুলি চালানো হয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমানউল্লাহ আমানসহ বহু নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
বিএনপি সহিংস রাজনীতি চায় না বলে দাবি করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় বিএনপিকে দায়ি করা হচ্ছে। কিন্তু কারা এ কাজ করছে তা সবাই জানে।
নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে ফখরুল বলেন, ভিসানীতির চাপে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আমান উল্লাহ আমানকে অতিরিক্ত সমাদর, নিজেদের রক্ষার জন্য এমন নাটক করেছে ক্ষমতাসীরা। এতে নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত হবে না।
তিনি বলেন, সরকার আগের চেহারায় ফিরে এসেছে। এভাবে নাটক করে আন্দোলন রোখা যাবে না। সরকারের বাহিনী ও ক্ষমতাসীন দলের নির্যাতনের জবাব না দেয়া বিএনপির দুর্বলতা নয়, জনগণের প্রতি জবাবদিহিতা। সবকিছুর একটা সীমা থাকা উচিত এটা সরকারকে বুঝতে হবে।
এদিন ডিএমপির নিষেধ অমান্য করে রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশমুখে অবস্থান নিতে যায় বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর নেতাকর্মীরা। বেলা ১১টা থেকেই তারা শনির আখড়া, ধোলাইখাল, মাতুয়াইল ও গাবতলীসহ বেশ কিছু এলাকায় অবস্থান নেয়।
বিএনপি নেতা আমান যান গাবতলীতে। আমিনবাজার ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান কর্মসূচি চলার মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এ সময় পুলিশ সদস্যরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
এরপর দুপুরের দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তার সহকারী একান্ত সচিব-২ গাজী হাফিজুর রহমান (লিকু) জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি নেতাকে আমানকে দেখতে যান।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘জনাব আমানউল্লাহ প্রধানমন্ত্রীর এ সকল উপহার গ্রহণ করেন এবং মানবতা ও রাজনৈতিক শিষ্টাচারের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান’।
অপরদিকে দুপুর ১২টার দিকে মাতুয়াইল থেকে গয়েশ্বরকে হেফাজতে নেয়ার কথা নিশ্চিত করেন ডিএমপির লালবাগ জোনের ডিসি জাফর হোসেন।
চার ঘণ্টা পর পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিকেলে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ডিবি অফিসে তাকে আপ্যায়িত করেন ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন। মধ্যাহ্নভোজনের কিছু সময় পর গয়েশ্বরকে ছেড়েও দেয়া হয়। তাকে পৌঁছে দেয়া হয় পুলিশের গাড়ি করেই।