উৎপাদন ঘাটতিতে দেশে যখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং চলছে, তখন ২০ টাকার বিনিময়ে দিনভর ইচ্ছেমতো বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ মিলছে রাজধানীতে। শুনতে অবাক লাগলেও ২০ টাকায় ফ্যান, লাইট, টিভি, কম্পিউটার সবই চলছে। আর এসি ব্যবহারে মাসিক খরচ দুই শ টাকা। কর্তৃপক্ষের নাকের ডগায় এমন তুঘলকি কারবার চলছে রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে।
ইলেকট্রনিক্স পণ্যের এই দোকানে দিনরাত চলে দুটা লাইট, একটা ফ্যান ও কম্পিউটার। বিদ্যুৎ খরচ নিয়ে তেমন চিন্তা নেই দোকানির। কারণ, ব্যবহার যতই হোক একদিনের বিল ২০ টাকা।
দোকান মালিক মোহম্মদ আমীর জানান, দৈনিক বিল দিয়েই বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন তিনি।
দোকানি বলেন, প্রত্যেক দোকানের মিটার নেই। কিছু দোকানের মিটার আছে। আর কিছু দোকানে দৈনিক ফি’র ভিত্তিতে বিদ্যুৎ দেওয়া হয়। আমি দৈনিক ২০ টাকা করে দেই।
তবে টিভি ক্যামেরা দেখে অন্য ব্যবসায়ীরা মুহূর্তেই সুর পাল্টান। তাদের দাবি, মাস শেষেই দিতে হয় বিল।
স্থানীয় দোকানিরা আরও জানান, লোক আসে বিল নিতে। তারা এসে বিল নিয়ে যায়।
রাজধানী মহাখালীর কড়াইল বস্তির ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে প্রায় দুই লাখ মানুষের বাস। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে গুলশান লেকের ওপর দিয়ে এভাবেই অবৈধ সংযোগ টানা হয়েছে।
এলাকার দোকানগুলোতে আছে একাধিক লাইনের ব্যবস্থা। একটিতে সংযোগ না থাকলে অন্য লাইন চালু করা হয়। ব্যবহারকারীরা জানান, বিদ্যুৎ সংকট চলায় তাদের সংযোগ ফিও বেড়েছে।
এক দোকানি বলেন, আগে বিল দিতাম মাসে ৫০০ টাকা। এখন দেই ৬০০ টাকা।
বস্তিতে আছে প্রতি মাসে দুই শ টাকা বিলে এসি ব্যবহারের সুবিধা। ক্যামেরা দেখে দোকান বন্ধ করে মুহূর্তেই সটকে পড়েন ব্যবহারকারী।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, বিদ্যুতের ইউনিট হিসেবে বিল নেয়। এখানে অনেকে সাপ্লাই দেয়। আমি নিয়েছি মোমিন নামে একজন থেকে।
এলাকাবাসী জানান, কড়াইলে বিদ্যুৎ সংযোগ এনেছেন ২০ নম্বর ওয়ার্ড কৃষকলীগের সভাপতি মোমিন। তবে প্রকাশ্যে কেউ তার নাম বলতে চান না। যোগাযোগের অনেক চেষ্টা করেও তার বক্তব্য জানা যায়নি।
ক্যামেরার সামনে কথা না বললেও পরিচয় গোপন করে বস্তিবাসীরা জানান, মোমিনের পাশাপাশি অবৈধ সংযোগ নিয়ন্ত্রণে জড়িত সোবহান, ঢালি, নায়েব, কামালসহ কয়েকজন। যাদের বেশির ভাগেরই রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে।