দহেন বিকাশ ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি।।
সংবাদ প্রকাশের পর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতা ও প্রধানমন্ত্রীর ঘর উপহার পাচ্ছেন দিনমজুরী করে খাওয়া বিধবা নারী বিনতী ত্রিপুরা। তিনি সদর উপজেলার ভাইবোনছড়া ইউনিয়নের ওয়াক্রাক পাড়া গ্রামের মৃত- গোপাল ত্রিপুরার স্ত্রী।
গত রোববার ( ১৩ জুন ২০২১খ্রিঃ) দৈনিক প্রতিদিনের চিত্র পত্রিকায় ‘তাদের কষ্টের সীমা নেই’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদটি খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন’সহ অনেকের দৃষ্টিগোচর হয়।
ফলে বুধবার (১৬ জুন ২০২১খ্রিঃ) বিকাল সাড়ে ৩টায় জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র সরেজমিনে গিয়ে বিনতী ত্রিপুরার ভাঙাচোরা ঘরখানা পরিদর্শনে গিয়ে জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস ঘোষণা দিলেন, ২লক্ষ ৭হাজার টাকার ব্যয়ে ভূমিসহ সরকারি একটি সেমিপাঁকা ঘর পাচ্ছেন বিধবা বিনতী। এসময় বিনতী ত্রিপুরাকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ দশ হাজার টাকার অর্থ সহায়তাও দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি বিনতী ত্রিপুরা যেনো আগামীতে বিধবা ভাতা পান সে বিষয়টি নিশ্চিত করবেন এবং সরকারি খরচে তাঁর এক সন্তানের পড়াশুনার দায়িত্ব নেবেন বলেও জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘বিনতী ত্রিপুরার সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে আমার দৃষ্টিগোচর হয়। পরিদর্শনে এসে বিনতী ত্রিপুরা’র কষ্ট প্রত্যক্ষ করলাম। আগামী দুয়েক দিনের মধ্যে বিনতী ত্রিপুরার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘর উপহার নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে।’
এদিকে ভূমিসহ ঘর, নগদ অর্থ সহায়তা, বিধবা ভাতা এবং সন্তানের পড়াশুনার নিশ্চয়তা পেয়ে বেজায় খুশি বিনতী ত্রিপুরা। জেলা প্রশাসকের কাছে নতজানু হয়ে কৃতজ্ঞতা জানাতেও ভুল করেননি এই বিধবা নারী।
বিনতী ত্রিপুরার ঘর পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসকের সফরসঙ্গী ছিলেন খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা মতিন, ভাইবোনছড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পরিমল ত্রিপুরা এবং সংরক্ষিত ৪,৫,৬নং ওয়ার্ডের মহিলা আসনের সদস্য করুনাময়ী চাকমা, দৈনিক প্রতিদিনের চিত্র পত্রিকার খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি দহেন বিকাশ ত্রিপুরা, সাংবাদিক মোঃ মাঈন উদ্দীন, সাংবাদিক দিদারুল আলম দিদার প্রমুখ।
এর আগে ওই এলাকার করোনায় ভাইরাসের কারণে অসহায় ও দুঃস্থ ৫০টি পরিবারের মাঝে নগদ ৫০০টাকা করে অর্থ সহায়তা প্রদান করেছেন জেলা প্রশাসক। পাশাপাশি স্থানীয় যুবকদের নিয়ে নবগঠিত ওয়াক্রাক পাড়ার ‘সাল কাতাল’ পাঠাগারের আসবাবপত্র ক্রয়ের জন্য নগদ ১০ হাজার টাকা প্রদান করেন তিনি। এছাড়া ওই পাঠাগারের জন্য বই দেয়ারও আশ্বাস দিয়েছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা মতিন।
শুধু যে বিনতী ত্রিপুরারই পাশে দাঁড়িয়েছেন এমনটা নয়, এর আগেও গেলো মে মাসে খাগড়াছড়ি সদরের কমলছড়ি ইউনিয়নের ভূয়াছড়ি এলাকার বিধবা বয়স্ক নারী খাদিজা বেগমের দুখের গল্প শুনে তড়িৎ ব্যবস্থা নিয়েছিলেন জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস। দিয়েছেন নগদ অর্থ সহায়তাসহ ভূমি ও সেমিপাঁকা ঘর। এমন নানা মানবিক কাজের দরুণ জেলাবাসীর হৃদয়ে নিজের জন্য আলাদা একটা ভালোবাসার জায়গা করে নিয়েছেন আমাদের জেলা প্রশাসক।