শনিবার , ২৬ জুন ২০২১ | ২রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
insidebusinessnews.com
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ
  3. অর্থনীতি
  4. আইন-আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. খেলাধুলা
  7. গল্প
  8. জাতীয়
  9. ধর্ম
  10. প্রবাস
  11. ফিচার
  12. বাণিজ্য
  13. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  14. বিনোদন
  15. বিভাগীয় সংবাদ

তাদের কষ্টের সংসার

প্রতিবেদক
Newsdesk
জুন ২৬, ২০২১ ৪:৪২ অপরাহ্ণ

দহেন বিকাশ ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি।।

কান্তি, দজিন, হজেন্দ্র ও চিনিঅং তারা চারজই একই গ্রামের বাসিন্দা। অনেক কষ্ট করে ভাঙাচোরা ঘরে জীবনযাপন করছেন তারা। তাদের ঘরে রান্না করে খাওয়া হাড়ি পাতিল ছাড়া নেই আর কোন কিছু। এভাবে কষ্টের দিন কাটে তাদের। বলছি খাগড়াছড়ি জেলা সদরের ভাইবোনছড়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের পূর্ণ কার্বারী গ্রামের কষ্টে জীবনযাপন করা, তাদের কথা। গত বুধবার (২৩জুন ২০২১খ্রিঃ) সরেজমিনে গিয়ে যা দেখলাম, তা বলছি:

কান্তি ত্রিপুরা, অনেক কষ্ট করে ভাঙাচোরা ঘরে জীবনযাপন করছেন তিনি। শ্বশুরের রেখে যাওয়া একমাত্র সম্বল বসত ভিটাতে কোন রকমে ঝুপড়ি ঘর বানিয়ে অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে জীবন যাপন করছে তিনি। সেখানে তিনজন ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন কান্তি। তার বাড়িতে সরকারের দেওয়া কোনকিছুই নেই, এমনকি করোনাকালীন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রণোদনা কোন কিছুই পায়নি তিনি।

কা্ন্তি ত্রিপুরা জানান, আমার বাবাও বৃদ্ধ, তিনিও দিনমজুরী। তিনি আলাদা বাসা তৈরি করে বিধবা দিদিকে নিয়ে থাকেন। আমি আগে মানুষের বাসায় চাকর হিসেবে শ্রম দিতাম। বিয়ের পরে শ্বশুরের সম্পত্তি হিসেবে একটা ঘর করার মতো বসতভিটা পেয়েছি। কিন্তু তার উর্পাজিত আয় দিয়ে বাড়ি করা সম্ভব হয়নি। কোন রকমে বাঁশের বেড়া, ভাঙাচোরা অর্ধেক টিন, অর্ধেক ছনের তৈরি ঘরে বসবাস করেন তিনি। আর্থিক সংকটের কারণে ঘর তৈরি করতে পারেনি। তাই বৃষ্টি হলে পানি পড়ে। তার একটি ঘর দরকার, ঘরটি পেলে তার দুঃখ ঘুচতো, ছেলে সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে মাথা গোঁজার একটা ঠাঁই হতো।

কান্তির স্ত্রী প্রভা ত্রিপুরা বলেন, তাদের একটা ছনের ঘর। ঘরে তারা ছেলে সন্তান ও স্বামী থাকে। ঘরে নেই কোন গৃহপালিত পশু-পাখি, যা দিয়ে আয় রোজগার হতো। তাদের বড় ছেলে অতুল ত্রিপুরা পার্শ্ববতী গ্রাম জোরমরম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪র্থ শ্রেণীতে পড়ে, মেঝ ছেলে বাতু ত্রিপুরা ইউনিসেফ পাড়া কেন্দ্রে পড়াশোনা করে।

তিনি আরো বলেন, বৃষ্টির দিনে ঘরে থাকতে পারে না। ঘরে যাতে বৃষ্টির পানি না ঢুকে তার জন্য কয়েকদিন আগে ঘরের চালে কাগজ লাগাইছে তারা। তার স্বামী দিনমজুর কাজ করে অনেক কষ্টে সংসার চালায়। তিনি নিজেও অন্যের বাড়িতে কাজ করে। এ অবস্থায় তাদের বাড়ি নির্মাণ অসম্ভব। তার স্বামীর মত তিনিও সরকারের কাছে একটি ঘর ভিক্ষা চাইছেন।

অন্যদিকে দজিন ত্রিপুরা। পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৬জন। পিতা: মৃত-অনন্ত ত্রিপুরা ও মাতা: মৃত- দশম পতি ত্রিপুরা। স্ত্রীর নাম: মৃত-চংমা লক্ষী ত্রিপুরা। তার সাথে আছে বিধবা মেয়ে সন্দ ত্রিপুরা। সন্দ ত্রিপুরার মেয়ে সাধনা ত্রিপুরা। তিনি বিবাহিত। আরেক জন শাবানা ত্রিপুরা (১১)। দজিন ত্রিপুরার ছেলে বিকাশ ত্রিপুরা (২৫)। বিবাহ করে একই বাড়িতে থাকেন। স্ত্রী শ্রাবন্তী ত্রিপুরা। শিশু সন্তান হেলেনসা ত্রিপুরা (১০মাস)। এ নিয়ে দজিন ত্রিপুরার বাড়িতে সদস্য সংখ্যা ৬জন। তাদের বাড়িতে নেই কোন আসবাবপত্র, নেই কোন ভালো মানের কাপড় চোপড়। অন্যের জায়গায় কোন রকমে ঝুপড়ি ঘর বানিয়ে অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে জীবন যাপন করছে তিনি। আর্থিক সংকটের কারণে ঘর তৈরি করতে পারেনি। তাই বৃষ্টি হলে পানি পড়ে। তার একটি ঘর দরকার, ঘরটি পেলে তার দুঃখ ঘুচতো, ছেলে সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে মাথা গোঁজার একটা ঠাঁই হতো। ঘর পেলে সন্তানদের জন্য রেখে, মরেও শান্তি পাবেন বলে জানান তিনি। সরকারের কাছে একটি ভূমিসহ একটা ঘর ভিক্ষা চাইছেন।

একই গ্রামের চিনিঅং ত্রিপুরার অবস্থাও খারাপ। কিছু ভৌগলিকগত কারণে একই ইউনিয়ন ও একই পাড়া হলেও তিনি ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। অন্ন কুমার ত্রিপুরা ও জাতি ত্রিপুরার ছেলে তিনি। স্ত্রীর নাম মল্লিকা ত্রিপুরা। দুই মেয়ে দুই ছেলেকে নিয়ে তাদের সংসার। তাদের মধ্যে ২য় মেয়ে সন্তান জন্ম থেকে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। বসতভিটা ঘর, শুকর ০১টি, গরু ০১টি ছাড়া তাদের আর কিছু নেই। জুম চাষ, অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে জীবন যাপন করছে তিনিও।

এছাড়া আরো একজনের কষ্ট না বললে নয়, তিনি হচ্ছেন হজেন্দ্র ত্রিপুরা। তার দুই মেয়ে ও দুই ছেলে। তারমধ্যে মেয়ে অনিলা ত্রিপুরা বিবাহিত। বাকী তিনজন হলেন গৌরাঙ্গ কুমার ত্রিপুরা, জেনশ্রী ত্রিপুরা ও ধনক কুমার ত্রিপুরা। প্রথম স্ত্রী মৃত্যুর পরে। ১ম স্ত্রীর মৃত্যুর পর ২য় স্ত্রী বিয়ে করেন তিনি। নাম তার ধরেন্দ্রী ত্রিপুরা। তিনি কষ্টের সংসার জীবন যাপন করছেন। কষ্টের সংসারের মধ্যে আবার শিব ভক্ত তারা। শিব মন্দিরের অবস্থাও করুণ। সংস্কারের অভাবে মন্দিরটিও জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় যুব উন্নয়ন কমিটির প্রতিনিধি চনিতা ত্রিপুরা, কতা ত্রিপুরা, রবিজয় ত্রিপুরা তাঁরা জানান, আমাদের পূর্ণ কার্বারী পাড়া গ্রামটি জেলা সদরের ভাইবোনছড়া ইউনিয়নের দুর্গম একটি গ্রাম। জেলা শহরের কাছাকাছি হলেও পাশে চেঙ্গী নদী থাকার কারণে সরকারের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে আমরা বঞ্চিত। তারপরও স্থানীয় প্রশাসনরা যদি একটু তৎপর হয়, অনেকাংশে তা সম্ভব। বর্তমানে আমাদের গ্রামে ৫৬টি পরিবার রয়েছে। তারমধ্যে নিরীহ ও অসহায় পরিবারের সংখ্যা ৮/১০ টির অধিক। আমাদের জানামতে, ভূমিহীন ও গৃহহীন অসহায়দের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘর উপহার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে যদি আমাদের পাড়ায় অন্ততঃ ৫/৬টি পরিবারকে ঘরের ব্যবস্থা করে দিলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিকট আমরা চিরকৃতজ্ঞ থাকবো। আমাদের আবেদনখানাটি যেন সুদৃষ্টি দেন সেজন্য স্থানীয় সাংসদ, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও ইউপি চেয়ারম্যানের প্রতি অনুরোধ করছি।

এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য শ্যামল কান্তি ত্রিপুরা জানান, বিষয়টি আমার অবগত আছে। তবে এসব বিষয়ে ঘরের বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষেত্রে চেয়ারম্যানই সবকিছু। চেয়ারম্যানই সর্বেসর্বা। তিনি আরও বলেন, ক্যারিং খরচ বেশি হওয়াতে দুর্গম অঞ্চলে ঐ বরাদ্দ দিয়ে ঘর বানাতে কষ্টকর হয়ে পড়ে বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে ভাইবোনছড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পরিমল ত্রিপুরা জানান, দুর্গম এলাকায় ঘর বরাদ্দ দিলেও ক্যারিং খরচ বেশি হওয়াতে অনেকেই কাজ করতে চাই না। এজন্য ভুক্তভোগীদের আমরা নগদ টাকা দিয়ে দিই, ঘর বানানোর জন্য। তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ঘর উপহারের প্রকল্প আসলে তাদেরকে ঘরের ব্যবস্থা করে দিতে পারি কিনা দেখবো।

সর্বশেষ - অন্যান্য

আপনার জন্য নির্বাচিত

নুসরাত হত্যা মামলা : বনজ কুমারের শাস্তি চেয়ে আসামির স্বজনদের বিক্ষোভ

বকেয়া মজুরির দাবিতে শ্রীমঙ্গলে চা–বাগানে কর্মবিরতি

শাকিবের ভুল ইংরেজি নিয়ে যা বললেন অভিনেত্রী ভাবনা

কুমিল্লায় বাড়তি দামে সার বিক্রি ও খাবারে রং; পাঁচ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

খাগড়াছড়িতে কাঠ বোঝাই ট্রাক উল্টে নিহত ২

বাংলাদেশের মুক্তির সংগ্রামের ইতিহাসে একুশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ : প্রধানমন্ত্রী

অনেকেই অনেক কিছু বলবে, এসবে কান দিলে চলবেনা : প্রধানমন্ত্রী

কুমিল্লায় বিএনপির সঙ্গে আ.লীগ ও পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা

খাগড়াছড়িতে পবিত্র রমজান উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর নগদ অর্থ বিতরণ:

ঘোড়ায় চড়ে স্কুলে যান শিক্ষক