উন্নত জীবনের আশায় গ্রিস থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে ইতালি যাওয়ার পথে প্রচণ্ড গরমে তাপস সরকার নামে সুনামগঞ্জের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এরই মধ্যে তার মৃত্যুর একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তাপস সরকার (৩০) ধর্মপাশা উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাগউচা গ্রামের মৃত সতীশ চন্দ্র সরকার ও জোছনা রানী তালুকদারের বড় ছেলে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ছয় মাস আগে বন্ধুদের সঙ্গে অবৈধ পথে তুরস্ক হয়ে গ্রিসে যায় তাপস। গ্রিসে বসবাসকারী বাংলাদেশি এক দালালের মাধ্যমে চুক্তি করেন গ্রিস থেকে সার্বিয়া যাওয়ার। কথা ছিল পরে সার্বিয়া থেকে অন্য দালালের মাধ্যমে যাবেন ইতালি।
এই পথে দালালরা প্রথমে গ্রিসের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে আলবেনিয়া প্রবেশ করায়। আলবেনিয়ায় দু-তিন দিন রেখে সুযোগ বুঝে মন্টিনেগ্রো নিয়ে যায়। মন্টিনেগ্রো নিয়ে আটকে রেখে চুক্তি করা অর্থ আদায় করে। টাকা পরিশোধ হলে নিয়ে যায় সার্বিয়া অথবা বসনিয়ায়। সেখান থেকে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে স্লোভেনিয়া হয়ে ইতালি পৌঁছায়। চুক্তি অনুযায়ী ৩ আগস্ট গ্রিস থেকে তাপসসহ ৩০ জনের একটি দলকে আলবেনিয়ায় নিয়ে যায় দালাল চক্রটি। আলবেনিয়া স্থল সীমান্ত থেকে তীব্র গরমের মাঝে আট ঘণ্টায় উঁচু পাহাড় পাড়ি দিয়ে মন্টিনেগ্রো প্রবেশের সময় হঠাৎ পাহাড়ের মাঝে লুটিয়ে পড়েন তাপস। এ সময় তার মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে দালালসহ অন্যান্য যাত্রী তাকে রেখেই চলে যান। তার সঙ্গে থাকা পরিচিত দুজন অনেক চেষ্টা করেও কোনো সাড়া না পেয়ে তারাও চলে যান। তখন একটি ভিডিও করে গ্রিসে থাকা স্বজনদের কাছে পাঠিয়ে দেন ওই দুই ব্যক্তি। তাপস এসএসসি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন। সুমন সরকার নামে তার এক ছোটভাই রয়েছেন।
সুমন সরকার জানান, তাপস গ্রিস থেকে ইতালি যেতে চেয়েছিল। কিন্তু প্রচণ্ড গরমে সে মারা যায়। ফেসবুকে ভিডিও দেখে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হন তারা।
তাপস সরকারের চাচা জয়শ্রী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শ্যামল সরকার বলেন, তাপস সরকার আড়াই বছর আগে তুরস্কে গিয়েছিল। ৭ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাপসের ভিডিও দেখে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি।
জয়শ্রী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সঞ্জয় রায় চৌধুরী জানান, এলাকার একজন ছেলে গ্রিস যাওয়ার পথে মারা গেছে এমন খবর তিনি শুনেছেন।তবে বিস্তারিত জানেন না।