পরের বাড়িতে থাকতে থাকতে তোদের সব গেছে। সাহস গেছে, মর্যাদাবোধ গেছে!”
দারুচিনি দ্বীপের জরির বড় চাচী, শুরু থেকেই তিনি কঠোর প্রকৃতির। তবে শেষের দৃশ্যে তিনি হয়ে উঠেন জরীর জীবনের আলোকবর্তিকা। কিংবা মনপুরা সিনেমার গাজীর স্ত্রী, শেষের দিকে যখন তার ভুল বোঝানোর কারনে পরী আত্বহত্যা করে, তখন তার ওপর খুব রাগ হয়েছিল।
বলছিলাম অভিনেত্রী শিরিন আলমের কথা, উপরের দুইটি সিনেমা হলেও, মূলত টিভি নাটকেই তিনি দর্শকপ্রিয় অভিনয় শিল্পী। দর্শকদের কাছে বেশি পরিচিতি পেয়েছেন ‘হাড়কিপ্টে’ ধারাবাহিকে মায়ের চরিত্রে অভিনয় করে। কৃপণ স্বামীর সংসার যে তিনি কিভাবে সামলেছেন, তা ধারাবাহিকটি দেখলেই বোঝা যায়। নাটকের শেষ পর্বে পুত্রের মৃত্যুর আহাজারিতে হৃদয় ছুঁয়ে গিয়েছিল।
অভিনয়ের শুরু আশির দশকে, তারপর থিয়েটারে ব্যস্ততা। আব্দুল্লাহ আল মামুনের ‘জোয়ার ভাটা’ দিয়ে আবার টিভি নাটকে আসেন। সালাউদ্দিন লাভলুর বেশ কয়েকটি নাটকে অভিনয় করেছেন। হাড়কিপ্টে তো রয়েছেই, শীল বাড়ি, ঘর কুটুম, সাকিন সারিসুরি সহ আরো অনেক নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। ‘তোমার দোয়ায় ভালো আছি মা’ নাটকেও অসাধারণ উপস্থিতি ছিল তার।
মায়াভরা কিংবা কঠোর- চরিত্র যে ধরনেরই হোক, তিনি আপন মহিমায় সেটাকে ফুটিয়ে তোলেন। তৌকীর আহমেদের ‘জয়যাত্রা’ ছিল প্রথম ছবি, শাস্তি ছবিতেও ছিলেন। তবে দারুচিনি দ্বীপ, মনপুরা তাকে বেশ পরিচিতি পাইয়ে দেয়, এখন বানিজ্যিক ধারার চলচ্চিত্রে নিয়মিত হবার চেষ্টা করছেন, মাঝে মাঝে নাটকেও দেখা যায়। এখন করছেন ‘পিতা বনাম পুত্র গং’।
শিরিন আলম দারুণ অভিনেত্রী একথা সবাই স্বীকার করবেন। তবে প্রতিভার তুলনায় অনুযায়ী আলোচনায় এসেছেন কম। এখনকার ভালো ও জনপ্রিয় নির্মাতাদের নাটকে মায়ের চরিত্রে সেভাবে দেখা যায় না তাকে, তবে ভালো চিত্রনাট্য হলে যে তিনি আলো ছড়াতে পারেন তার উদাহরণ মিজানুর রহমান আরিয়ানের ‘লাইফ ইনন্সুরেন্স নাটকটা, ‘ভাগের মা’ নাটকে প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেও আলোচিত হয়েছিলেন। এখনকার ভালো ভালো নির্মাতারা তাকে আরও বেশি ব্যবহার করবেন, এই প্রত্যাশাতেই থাকি।
শুভ জন্মদিন, শিরিন আলম! ❤️
লেখা- হৃদয় সাহা