বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে পালিত হচ্ছে জাতীয় শোক দিবস। এরই ধারাবাহিকতায় শোক দিবস পালিত হলো সৌদি আরবে। যথাযোগ্য মর্যাদায় সোমবার (১৫ আগস্ট) রাজধানী রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদতবার্ষিকী পালিত হয়েছে।
১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। বাঙালির শোকের দিন। ১৯৭৫ সালের এদিনেই বিপথগামী কিছু সেনাসদস্য বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেন। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সঙ্গে নিহত হন তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্য।
দিবসটি উপলক্ষে সোমবার সকালে রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করার মধ্যদিয়ে কর্মসূচির শুরু হয়। পতাকা অর্ধনমিত করেন সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার)। এরপর রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এ সময় দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
এরপর জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় রিয়াদস্থ বাংলাদেশি প্রবাসীদের বিভিন্ন সংগঠন। এরপর বাংলাদেশ দূতাবাসে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। উপস্থাপনা করেন দূতাবাসের কাউন্সেলর মো. বেলাল হোসেন। এ সময় শোক দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর পাঠানো বিশেষ বাণী পাঠ করা হয়।
আলোচনা সভায় প্রবাসে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী পাঠের পরামর্শ রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে জানতে হলে বঙ্গবন্ধুকে জানতে হবে। তার জীবনী পাঠ করতে হবে।
প্রবাসীদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ ও লালন করার আহবান জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, বঙ্গবন্ধু সারা জীবন মানুষের জন্য রাজনীতি করেছেন, দেশের উন্নয়নের জন্য রাজনীতি করেছেন। তিনি তার জীবন উৎসর্গ করেছেন সাধারণ মানুষের কল্যাণে।
রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছেন। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে প্রবাসীদের যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসার আহবান জানান রাষ্ট্রদূত।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর আরও আলোকপাত করেন দূতাবাসের ডিফেন্স অ্যাটাশে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম ফারুক। অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশি প্রবাসীদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।
এছাড়া রিয়াদস্থ প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ড. নুরুন নবী, চিকিৎসক ডা. কামরুল ইসলাম, ব্যবসায়ী এম আর মাহাবুব, মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী মোয়াজ্জেম হোসেন, জাকির হোসেন ও মো. আব্দুস সালাম বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে নির্মলেন্দু গুনের কবিতা ‘সেই রাত্রির কল্পকাহিনী’ আবৃত্তি করেন সাহিত্যিক শাহজাহান চঞ্চল। এরপর জাতির পিতার জীবন ও কর্ম নিয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। শোক দিবস উপলক্ষে দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন।
সবশেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবসহ পরিবারের সব শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। এছাড়া দেশ ও জাতির সার্বিক মঙ্গল কামনা করে দোয়া করা হয়।