সোমবার , ২২ আগস্ট ২০২২ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
insidebusinessnews.com
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ
  3. অর্থনীতি
  4. আইন-আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. খেলাধুলা
  7. গল্প
  8. জাতীয়
  9. ধর্ম
  10. প্রবাস
  11. ফিচার
  12. বাণিজ্য
  13. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  14. বিনোদন
  15. বিভাগীয় সংবাদ

পশ্চিমবঙ্গে সুন্দরবন থেকে উদ্ধার ১৭ বাংলাদেশি জেলে, নিখোঁজ ২

প্রতিবেদক
Newsdesk
আগস্ট ২২, ২০২২ ১২:৫৩ অপরাহ্ণ

গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে এসে গত ১৭ আগষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে পড়ে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি জেলে। প্রায় ৪৮ ঘণ্টা বঙ্গোপসাগরের উত্তাল সমুদ্রের পানির সঙ্গে লড়াই করেন তারা। এরপর সাঁতরে আশ্রয় নেন সুন্দরবনের ঘন জঙ্গলে। পানিতে কুমির, ডাঙ্গায় বাঘ- এমন অবস্থায় গাছেই রাত কাটাতে হয় তাদের। অবশেষে স্থানীয় মৎস্যজীবী এবং পুলিশের সহায়তায় প্রাণ ফিরে পান অনেকেই। যদিও এখনও নিখোঁজ তাদের দুই সহকর্মী। 

জানা যায়, গত ১৫ই অগস্ট বাংলাদেশের পাথরঘাটা থেকে গভীর সমুদ্রে পাড়ি দেয় এফবি ভাই ভাই ট্রলার। বাংলাদেশের বরগুনা জেলার ১৯ জন মৎসজীবী মাছ ধরার জন্য রওনা দিয়েছিলেন ওই ট্রলারে করে। পর পর দুই দিন তারা সকলেই মাছ ধরেন। কিন্তু ১৭ তারিখ সন্ধ্যায় পর থেকেই আবহাওয়া ধীরে ধীরে খারাপ হতে শুরু হয়। প্রবল জলোচ্ছ্বাসে ট্রলারটির নিচের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ভিতরে পানি ঢুকতে থাকে। জীবন বাঁচাতে লাইফ জ্যাকেট ও অন্যান্য সামগ্রী দিয়ে নিজেদের বাঁচার তাগিদে ভেলা ও একে অপরের হাত ধরে মানববন্ধন তৈরি করেন বাংলাদেশী মৎস্যজীবীরা। ভেলা সম্বল করে দু’দিন দু’রাত কাটে  উত্তাল সমুদ্রে। দুদিনে খাওয়ার বলতেও কিছুই ছিল না, ঝড় ও পানির দাপটে তাদের কাছে থাকা শুকনো খাবারও ভেসে যায়। ক্ষুদা মেটানোর জন্য কেবল মাত্র একটি কাঁচা কদু (লাউ) খেয়েছেন সকলে ভাগ করে। এরই মধ্যে উত্তাল সমুদ্রের ঢেউ দুই সঙ্গীকে বাকিদের থেকে আলাদা করে দেয়। এই অবস্থায় দুই সহযোগীকে সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের পানিতে রেখেই বেরিয়ে আসতে হয় বাকিদের। এখনও তাদের সন্ধান মেলেনি। জানা নেই তারা আদৌ বেঁচে আছেন কি না।

শনিবার জীবিত মৎস্যজীবীরা ভাসতে ভাসতে তীরে এসে পৌঁছায়। সুন্দরবনের কালিবাড়ি দ্বীপে আশ্রয় নেয় তারা। সেখানে আবার বাঘের ভয়। কোনমতে রাত কাটে জঙ্গলের গাছের উপর। এক কথায় প্রতিটা মুহূর্ত কাটতে থাকে ভয়ানক আতঙ্কের মধ্যে।

অবশেষে, রবিবার দুপুর ১২ টা নাগাদ সুন্দরবনের মৈপীঠে একটি কাঁকড়া ধরার নৌকো দেখতে পান তারা। এরপর গায়ের পোশাক নাড়িয়ে সাহায্যের জন্য আবেদন জানান তারা। পরে কাঁকড়া ধরার নৌকায় করে ১৭ জন বাংলাদেশিকে নিয়ে আসা হয় মৈপীঠ কোস্টাল থানায়। ততক্ষণে ওই মৎস্যজীবীদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের শারীরিক অসুস্থতা লক্ষ্য করে দ্রুততার সঙ্গে পদক্ষেপ নেন পুলিশ কর্মকর্তা মধুসূদন পাল। রাত বারোটা নাগাদ তাদের পাঠানো হয় জয়নগর কুলতলী গ্রামীণ হাসপাতালে। প্রত্যেকের থাকার জন্য ত্রাণ শিবিরের ব্যবস্থা করেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

সেই অভিজ্ঞতার কথা জানান মোহাম্মদ বশির বিশ্বাস নামে এক মৎস্যজীবী। তিনি বলেন, “যেদিন মাছ ধরতে নেমেছিলাম, তখন আবহওয়া খুবই ভালো ছিল। এরপর দুদিন আমরা মাছ ধরি কিন্তু আবহাওয়া খারাপ হওয়ার পরেই আমাদের নৌকাটি ফেটে যায়। এর পরেই আমদের জীবন সংসয় দেখা দেয়। দুদিন দুরাত বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে সমুদ্রের সাঁতার কেটে বেঁচে থাকি অবশেষে স্থানীয় মৎস্যজীবীদের সহায়তায় প্রাণ ফিরে পাই।

সর্বশেষ - অন্যান্য