ঢাকা: পাহাড়ে সাম্প্রতিক সময়ে আবার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছ। প্রতি মাসেই পাহাড়ের তিন জেলার কোথাও না কোথায় ঘটছে হত্যার ঘটনা। এবার শান্তি ফিরিয়ে আনতে তিন পার্বত্য জেলায় সেনা বাহিনীর ছেড়ে যাওয়া অস্থায়ী সেনা ক্যাম্পগুলোতে আধুনিক পুলিশ মোতায়েনের সিধান্ত নিয়েছে সরকার। পাহাড়ে হত্যা ও সংঘষের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় সরকার এ সিধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
রবিবার (২৮ ফেব্রুয়ারী) সকাল সাড়ে ১১ টায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করেন জনসংহতি সমিতির চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা বা সন্তু লারমা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর কক্ষে এই জরুরী সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন এবং বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল ড. বেনজির আহমেদ অংশ নেন।
উল্লেখ, গত ২৫ ফেব্রুয়ারীও হত্যার ঘটনা ঘটেছে রাঙামাটিতে। জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের ভেতরে ব্রাশ ফায়ার করে সমর বিজয় চাকমাকে হত্যা করা হয়। সমর বিজয় চাকমা বাঘাইছড়ির রূপকারি ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছিলেন। এছাড়া তিনি জেএসএস এমএন লারমা দলের বাঘাইছড়ি থানা কমিটির স্কুল বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করতেন। এদিকে গত বছরের ৭ জুলাই বান্দরবানের বাঘমারায় ঘরে ঢুকে গুলি চালিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সংস্কারপন্থি অংশের ছয়জনকে হত্যা করা হয়েছে।
প্রায় তিন ঘন্টা ধরে রুদ্ধদার বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের জানান, সাম্প্রতিক সময়ের পার্বত্য চট্টগ্রামের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, পার্বত্য শান্তিচুক্তির অবাস্তবায়িত বিষয়গুলো আলোচনা হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে পাহাড়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে এ কথা স্বীকার করে বলেন, অস্ত্র ঝনঝনানি শুনা যাচ্ছে পাহাড়ে। সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে পাহাড়ে আইন শৃংঙ্খলা বিষয়ে নজর দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরে অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করে দেয়া হয়েছিলো। কমিটির সুপারিশের প্রেক্ষিতে পাহাড়ে শান্তি বজায় রাখতে সেনা বাহিনী যেসব জায়গার অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প থেকে চলে এসেছে সেখানে আধুনিক পুলিশ সদস্যদের মোতায়েন করা হবে। এ বিষয়ে সহযোগীতার জন্যই জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমার সাথে বৈঠক হয়েছে। তিনি পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, সন্ত্রাস দমনে সব রকমের সাহায্য সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
পাহাড়ের সেনা ক্যাম্প সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, পার্বত্য শান্তিচুক্তি ধারা মোতাবেক আমরা অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার করে নিয়েছি তবে পাহাড়ে আইন শৃঙ্খলা যাতে বিঘ্নিত না হয় সেজন্য বিশেষ বিশেষ অস্থায়ী সেনা ক্যাম্পে বিশেষ পুলিশ বাহিনীকে মোতায়েন করা হবে।