মঙ্গলবার , ২ মার্চ ২০২১ | ১৬ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
insidebusinessnews.com
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ
  3. অর্থনীতি
  4. আইন-আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. খেলাধুলা
  7. গল্প
  8. জাতীয়
  9. ধর্ম
  10. প্রবাস
  11. ফিচার
  12. বাণিজ্য
  13. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  14. বিনোদন
  15. বিভাগীয় সংবাদ

বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ে পাঁচ তারকা হোটেল ও বিনোদন পার্ক নির্মাণের প্রতিবাদে জাতীয় জাদুঘরের সামনে সংহতি সমাবেশ ।

প্রতিবেদক
Newsdesk
মার্চ ২, ২০২১ ৪:০১ অপরাহ্ণ

ঢাকা: “চিম্বুক পাহাড়ে আমাদের পূর্বপুরুষরা যুগ যুগ ধরে বসবাস করে আসছে। ওই নাইতং পাহাড়েই আমাদের জীবন জীবিকার উৎস। সেখান থেকে আমাদের উচ্ছেদ করলে আমরা কোথায় যাব? যদি হোটেল বানাতে হয় তাহলে আমাদের (ম্রো) সবাইকে মেরে ফেল”। বান্দরবানের চিম্বুক থেকে আসা মেনচিত ম্রো তার মাতৃভায়ায় বক্তব্যে এইভাবে বলছিলেন।

আজ মঙ্গলবার(২রা মার্চ) সকালে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ে পাঁচ তারকা হোটেল ও বিনোদন পার্ক নির্মাণের প্রতিবাদে সংহতি সমাবেশ করেছে চিম্বুক পাহাড় ম্রো ভূমি রক্ষা আন্দোলনের প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে  বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা ফজলে হোসেন বাদশা, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি), বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), পার্বব্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), আদিবাসী যুব ফোরাম, আদিবাসী সংগ্রাম পরিষদ সমাবেশে সংহতি জানান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রুবায়েত ফেরদৌস বলেন,’ আমি ম্রো বা বম জনগোষ্ঠি ভাইদের বলব, এদেশের একজন মুসলিম বা বাঙ্গালীর যতটুকু প্রাপ্য অধিকার আছে ঠিক ততটুকুই আপনাদেরও সাংবিধানিক অধিকার আছে। কোনভাবেই আপনারা আপনাদের নিজেদের জায়গা ত্যাগ করে যাবেন না। সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে, ফাইট করে নিজেদের অধিকার আদায় করে নিতে হবে। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পক্ষ থেকে সংহতি প্রকাশ করছি এবং যতবার আপনারা বলবেন ততবারই আমি আপনাদের অধিকার আদায়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকব।’

সমাবেশে সংহতি জানিয়ে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, ‘এক সময় আমরা নিজেদের জন্য রক্ত দিয়েছি। এখন তারা তাদের নিজেদের সংস্কৃতি নিয়ে বাঁচতে চাচ্ছে সেটা কেন হতে দেওয়া হবে না? এই উচ্ছেদ স্বাধীনতা, সংবিধান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি পরিপন্থী।’

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা)  প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘বাংলাদেশের বনে যদি এভাবে রিসোর্ট হতে থাকে, তাহলে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য আমরা প্রাকৃতির বৈচিত্র্য নাকি শুধু রিসোর্ট রেখে যাব সেটা চিন্তা করতে হবে। বান্দরবানে ইকো রিসোর্ট করার প্রয়োজন নেই, বান্দরবান নিজেই ইকো রিসোর্ট।’

বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন, ‘ম্রোদের সঙ্গে যা করা হচ্ছে এটি অন্যায়। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ১৪টি ভাষা ইতোমধ্যে হারিয়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে খুবই খারাপ হবে।’

সংহতি সমাবেশে অন‍্যান‍্য বক্তারা বলেন, সম্প্রতি চিম্বুকের নাইতং পাহাড়ে ম্রো অধ্যুষিত অঞ্চলে বিতর্কিত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সিকদার গ্রুপের অঙ্গ সংগঠন আর অ্যান্ড আর হোল্ডিংস লিমিটেডের উদ্যোগে ম্যারিয়ট হোটেলস অ্যান্ড রিসোর্টস নামে একটি পাঁচ তারকা হোটেল ও বিনোদন পার্ক নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কারণে চিম্বুক ও নাইতং পাহাড়ে শতাব্দীকাল ধরে জুম চাষ করে আসা ম্রো জনগোষ্ঠী তাদের বসতভিটা, শ্মশান, পবিত্র পাথর, পবিত্র বৃক্ষ, পানির উৎস ইত্যাদি থেকে উচ্ছেদ হবে।

এর আগে ১৯৯১-৯২ সালে বাংলাদেশ সেনা ও বিমান বাহিনীর গোলন্দাজ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের কারণে বান্দরবানের সুয়ালক ও টংকাবতী ইউনিয়নের তিনটি মৌজা থেকে ৩৮১ ম্রো পরিবারকে উচ্ছেদ হয়। আবার ২০০৬-০৭ সালে একই এলাকা থেকে আরও তিন শতাধিক ম্রো পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়। এরপর নীলগিরি হিল রিসোর্টস স্থাপনকালে দুই শ ম্রো ও মারমা পরিবারকে উচ্ছেদ হতে হয়।

সর্বশেষ - অন্যান্য