সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যার তদন্তে পশ্চিমবঙ্গে যে মাংসের টুকরো ও হাড়গোড় উদ্ধার হয়েছে, সেগুলোর ডিএনএ পরীক্ষার অনুমতির জন্য আদালতে যাচ্ছে কলকাতা সিআইডি।
টাইমস অব ইন্ডিয়াকে কলকাতা সিআইডির আইজি অখিলেশ চতুর্বেদী বলেছেন, মাংসের টুকরো ও হাড়গোড়ের পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রাথমিক ফরেনসিক প্রতিবেদন তারা পেয়েছেন।
প্রতিবেদন থেকে তারা নিশ্চিত হয়েছে এগুলো ‘মানুষেরই দেহাবশেষ’ এবং তা ‘পুরুষ মানুষের’।
অনুমতি পেলে আনারের স্বজনদের ডেকে ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে এবং তারপর সিদ্ধান্তে আসা যাবে বলে জানান অখিলেশ।
এক সিআইডি কর্মকর্মা টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, ডিএনএ পরীক্ষার জন্য কূটনৈতিক অনুমতিরও বিষয় আছে। বাংলাদেশের সংসদ সদস্যের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিনকে শেষবারের ডিএনএ সিকোয়েন্সিং এর জন্য আসতে বলা হবে। পুরো প্রক্রিয়ায় একটু সময় সাপেক্ষ।
এদিকে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের দেহাংশের সন্ধানে গ্রেপ্তার সিয়াম হোসেনকে নিয়ে তল্লাশি অভিযানে রোববার কৃষ্ণমাটির বাগজোলা খাল থেকে বেশ কিছু হাড়গোড় উদ্ধার করা হয়।
ওই খাল থেকে বড় মাঝারি সাইজের সাতটি এবং বুকের পাঁজরের ১২টি হাড় উদ্ধার হয়েছে। হাড়গুলি মূলত হাতের বিভিন্ন জায়গায় এবং কোমর থেকে পায়ের হাঁটু পর্যন্ত ।
জিজ্ঞাসাবাদে সিয়াম জানিয়েছে, পলাতক আখতারুজ্জামান শাহিনের অধীনে ৬০ হাজার টাকা বেতনে কাজ করতো। শাহিনের নির্দেশেই সে জিহাদকে কলকাতা এনে রাজারহাটে ভাড়ার ফ্ল্যাটে রেখেছিল। খুনের জন্য ব্যবহৃত অস্ত্র প্লাস্টিক টলি ব্যাগ সবকিছুই কিনে এনেছিল নিউমার্কেট এলাকা থেকে।
সিয়াম জানায়, অন্য দুই অভিযুক্ত ফয়সাল এবং মুস্তাফিজ মাংস কিমা করার মেশিন কিনে এনেছিল। আনারকে হত্যার পর মাংস এবং হাড় আলাদা করা হয়। তারপর ছোট ছোট টুকরো এবং কিমা করা হয় ওই মেশিনে। ওই মেশিন এখন কোথায় তা জানে ফয়সাল।
গত ১২ মে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে কলকাতায় যাওয়ার পরেরদিন রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যান তিনবারের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার।
এরপর ২২ মে সকালের দিকে তার খুনের খবর প্রকাশ্যে আসে। পুলিশ বলছে, কলকাতার উপকণ্ঠে নিউটাউনের অভিজাত আবাসন সঞ্জীবা গার্ডেনসের একটি ফ্ল্যাটে আনারকে খুন করা হয়।
খুনের আলামত মুছে ফেলতে দেহ কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়। এরপর সুটকেস ও পলিথিনে ভরে ফেলে দেওয়া হয় বিভিন্ন জায়গায়। ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্যকে হত্যার পর মরদেহ ফেলার কাজে অংশ নেয়া মুম্বাই থেকে ভাড়া করে আনা কসাই জিহাদকে গ্রেপ্তার করেছে কলকাতা পুলিশ। আরেক অভিযুক্ত নেপালে গ্রেপ্তার সিয়াম হোসেনকেও হেফাজতে নিয়েছে কলকাতা পুলিশ।