মঙ্গলবার রাত ১১টায় জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার আগপয়লা গ্রামে ঝর্ণা, তার দুই সন্তান জান্নাত ও জাকারিয়া এবং রাত ১২টায় জেলার ইসলামপুর উপজেলার ঢেংগারগড়ে ফাহিমার জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এর আগে রাত ১০টার দিকে নিহতদের লাশ জামালপুরে তাদের নিজ নিজ গ্রামে এসে পৌঁছে।
সরেজমিন দেখা যায়, লাল-নীল বাতির সঙ্গে সাইরেন বাজিয়ে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি এগিয়ে এলে ভিড় জমান শত শত উৎসুক জনতা। আর অ্যাম্বুলেন্সের দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় স্বজনদের আর্তচিৎকার। তাদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠে পরিবেশ। হঠাৎ এমন মৃত্যুতে হতবাক নিহতদের স্বজনসহ স্থানীয়রা।
দুই সন্তান ও স্ত্রীকে হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন জাহিদুল ইসলাম। ঝর্ণা ও সন্তানদের নিয়েই ছিল তার সাজানো-গোছানো সংসার। মুহূর্তেই যেন তা এলোমেলো হয়ে গেল। কান্নাজড়িত কণ্ঠে জাহিদ জানান, বৃহস্পতিবার স্ত্রীর বড় বোন ফাহিমার মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে স্ত্রী, দুই শিশুসন্তান জান্নাত ও জাকারিয়াকে নিয়ে ঢাকার আশুলিয়ায় যান। শনিবার বিয়ের অনুষ্ঠান সমাপ্ত হওয়ার পর জরুরি কাজ থাকায় স্বামী জাহিদুল ইসলাম নিজ বাড়ি জামালপুরে ফিরে আসেন। ঢাকাতেই রয়ে যান দুই সন্তানসহ স্ত্রী ঝর্ণা।
জাহিদুলের মা জবেদা বেগম জানান, বেশ কয়েক বছর আগে আমার বড় ছেলে ঢাকায় দুর্ঘটনায় মারা যায়। এখন আবার সেই ঢাকাতেই ছোট ছেলের বউ আমার ছোট দুই নাতি-নাতনিও দুর্ঘটনায় মারা গেল। আমার আর কেউ থাকল না।
প্রসঙ্গত, সোমবার বিকালে রাজধানীর উত্তরায় নির্মাণাধীন বাস র্যাপিড ট্রানজিট বা বিআরটি প্রকল্পের ফ্লাইওভারের ভায়াডাক্ট ছিটকে প্রাইভেটকারে পড়ে দুই শিশুসহ পাঁচ আরোহী নিহত হন। দুজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।