সোনালী আঁশে ভরপুর, ভালোবাসি ফরিদপুর’ এ শ্লোগানে পাটকে ফরিদপুর জেলার ব্র্যান্ড ঘোষণা করা হয়েছে। এ অঞ্চলের পাটের সুনামও আছে, দেশ-বিদেশের পাটকলে। সেই পাট নিয়েই এ বছর বিপাকে পড়েছেন ফরিদপুরের পাটচাষিরা। পানির অভাবে জাগ দিতে না পারায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বিপুল পরিমাণ পাট। বিকল্প পদ্ধতিতে জাগ দেয়ায় বাড়ছে খরচ, নষ্ট হচ্ছে মান।
কৃষি নির্ভর ফরিদপুরে পাটের আবাদ যেমন বেশী হয়, তেমনি এখানের পাটের চাহিদা ও সুনাম ছাড়িয়েছে দেশের সীমানা। গুনে-মানে সেরা হওয়ায় ফরিদপুর অঞ্চরের পাটের দামও থাকে বেশি। কিন্তু এ বছর সেই পাট নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষীরা। জেলার কোথাওই যেনো নেই জাগ দেয়ার মতো পানি। গর্ত করে পলিথিন ও মাটি দিয়ে পাট রেখে তাতে স্যালো মেশিন দিয়ে পানি দিয়ে পাট পচানোর চেষ্টা করছেন চাষীরা। এতে পাটের রং ও মান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
একজন পাটচাষী বললেন, আমাদের অনেক কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জাগ দিতে পাট নিয়ে অনেকদূরের নদী, খাল-বিলে যেতে হচ্ছে। কোথাও কোনো পানি নাই, এখন আমরা কী করবো! অনেকেই মাটি খুঁড়ে স্যালো মেশিন মাধ্যমে পানি দিয়ে পাট পঁচাচ্ছে; এভাবে পাটের রং নষ্ট হচ্ছে দামও পাওয়া যাচ্ছে না।
জানা গেছে, বিকল্প পদ্ধতিতে জাগ দেয়ায়, উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে, নষ্ট হচ্ছে পাটের মান। পাটের বাজারদর ৩ থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা, তাতে ৪০০-৫০০ টাকা কৃষকের থাকার কথা ছিল, কিন্তু বাড়তি খরচের জন্য এখন কৃষকের কোনো লাভই থাকছে না।
ফরিদপুর জেলায় পাট আবাদের লক্ষমাত্রা ৮৫ হাজার হেক্টর হলেও এ বছর আবাদ হয়েছে মাত্র ৮৮ হাজার হেক্টর জমিতে। যার প্রায় অর্ধেক পাট ইতোমধ্যেই কেটে ফেলেছে কৃষকরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের ডিডি একেএম হাসিবুল হাসান বলেন, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ৮৭ হাজার ৪৭৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে।
মণ প্রতি পাটের দাম অন্তত ৪ হাজার টাকা নির্ধারনের দাবি জানিয়েছেন, স্থানীয় কৃষকরা।