বগুড়ায় প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রেমিকের মোটরসাইকেল ছিনতাই করার অভিযোগে এক তরুণীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ইতোমধ্যে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানান জেলা পুলিশের সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম। এর আগে রোববার (১৪ আগস্ট) রাতে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ছিনতাই করা মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। তবে এ ঘটনায় জড়িত বৃষ্টির স্বামী সিরাজুলকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত বৃষ্টি আখতার (২০) বগুড়া সদরের সিরাজুল ইসলাম সেতুর স্ত্রী।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কয়েক দিন আগে বগুড়া সদর থানার দাড়িয়াল গ্রামের আব্দুল ওয়াহাব লটারিতে একটি মোটরসাইকেল পান। পরে পাশের গ্রামের সিরাজুল মোটরসাইকেলটি ছিনতাই করার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী সিরাজুল তার স্ত্রীকে রবিনের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে দেন। একই সঙ্গে তার সঙ্গে প্রেমের অভিনয় করতে বলেন। স্বামীর পরামর্শে বৃষ্টি রবিনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পরে দেখা করার প্রস্তাব দেন বৃষ্টি।
এদিকে মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) দুপুরে মোটরসাইকেলযোগে রবিন তার বন্ধু নিরবকে সঙ্গে নিয়ে শিবগঞ্জ উপজেলার ভাসুবিহার নরপতির ধাপ এলাকায় যায়। সেখানে আগে থেকেই রবিনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন বৃষ্টি। পরে রবিন ভাসুবিহার নরপতির ধাপে পৌঁছে বৃষ্টির সঙ্গে দেখা করে। এ সময় তারা দুজনে নির্জন স্থানে বসে গল্প শুরু করেন। এ সুযোগে বৃষ্টি তার স্বামীকে মোবাইল ফোনে মেসেজ দিয়ে তাদের অবস্থান জানিয়ে দেন। বৃষ্টি তার প্রেমিকের সঙ্গে গল্প করার সময় আগে থেকেই নিয়ে আসা কোমল পানীয়তে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে পান করান। কিছুক্ষণের মধ্যে অসুস্থবোধ করেন রবিন।
এ ছাড়াও বৃষ্টির স্বামী তার এক সহযোগীকে নিয়ে সেখানে পৌঁছান। এ সময় বৃষ্টির সঙ্গে গল্প করার অপরাধে চড়থাপ্পড় দিয়ে রবিনের মোটরসাইকেলসহ তাকে তুলে নিয়ে যান। পরে ফাঁকা স্থানে রবিনকে মারপিট করে রাস্তায় ফেলে রেখে মোটরসাইকেল ও মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যান সিরাজুল।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম জানান, গত রোববার ঘটনাটি শিবগঞ্জ থানা পুলিশকে জানান ভুক্তভোগীর মা রোজিনা। পরে পুলিশ অভিযান শুরু করে। এ সময় তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় বৃষ্টি আখতারের অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃত বৃষ্টির স্বামী পালিয়ে যান। এ সময় বৃষ্টির দেওয়া তথ্যমতে দিনাজপুরের বিরামপুর থানা এলাকা থেকে মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়। তবে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত তার স্বামী সিরাজুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।