বুধবার , ১৪ জুলাই ২০২১ | ২০শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
insidebusinessnews.com
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ
  3. অর্থনীতি
  4. আইন-আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. খেলাধুলা
  7. গল্প
  8. জাতীয়
  9. ধর্ম
  10. প্রবাস
  11. ফিচার
  12. বাণিজ্য
  13. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  14. বিনোদন
  15. বিভাগীয় সংবাদ

ল্ক বা পুঁতির মালা ত্রিপুরা নারীদের বিশেষ আত্মরক্ষার ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হত

প্রতিবেদক
Newsdesk
জুলাই ১৪, ২০২১ ৮:০৬ অপরাহ্ণ

ত্রিপুরা (উসুঁই) নারীরা ল্ক(পুঁতির মালা)অলঙ্কার হিসেবে গলায় পরিধান করে থাকে। তবে, ল্ক অলঙ্কার হিসেবে ব্যবহার হলেও এককালে এটি ত্রিপুরা নারীদের বিশেষ আত্মরক্ষার ঢাল হিসেবেও ব্যবহার করা হত। এমন তথ্য ত্রিপুরা(উসুঁই)সমাজে প্রচলিত বিভিন্ন লোকগাঁধা ও রূপকথার গল্পে কথিত আছে। পুঁতির মালাকে ত্রিপুরা উসুঁই ভাষায় ল্ক বলা হয়। ল্ক দুই প্রকার:-১. ল্ক চ্লা (পুরুষ পুঁতির মালা) এবং ২. ল্ক ব্রৈ (নারী পুঁতির মালা)। ল্ক চ্লা নারী-পুরুষ উভয়ই গলায় পরেন আর ল্ক ব্রৈ শুধুমাত্র নারীরা পড়ে থাকে।

চবা ত্রিপুরা ভাষায় যার বাংলা অর্থ ডাকাত দল একসময় পাহাড়ে প্রায় সময় চ্বা বা ডাকাত পড়ত। ডাকাত দল তাদের হাতে থাকা তলোয়ার বা ধারালো অস্ত্র দিয়ে ডাকাতি করত। তাদের সামনে যাকেই পেত তাকে গলা কেটে হত্যা করে ঘরের সমস্ত টাকা-পয়সা, সোনা-দানা, অলঙ্কার সব লুট করে নিয়ে চলে যেত। তবে, ল্ক বা পুঁতির মালার কারণে প্রায় নারীরা বেঁচে যতে । কারণ, সারা গলায় পুঁতির মালা দিয়ে ঢেকে থাকায় ডাকাতরা সহজে তলোয়ার-দা দিয়ে গলা কাটতে পারতনা।

 

ভারতে ব্রিটিশ শাসনকালে ত্রিপুরা একটি স্বাধীন করদ রাজ্য ছিল। মাণিক্য রাজবংশ ১৯৪৭ সালে ত্রিপুরা ভারতের অন্তর্ভূক্ত হওয়ার পূর্বাবধি অঞ্চলটি ধারাবাহিকভাবে শাসন করে। কথিত আছে প্রায় ২৫০০ বছর ধরে ১৮৬জন রাজা এই অঞ্চলটি শাসন করেছেন। ত্রিপুরা জনগোষ্ঠির সিংহভাগ ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে বসবাস করলেও একই দেশের মিজোরাম রাজ্য এবং বাংলাদেশে বাস করে । বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান  জেলায় ত্রিপুরা জনগোষ্ঠির বিভিন্ন গোত্র বসবাস করে। এছাড়াও, বাংলাদেশের  বিভিন্ন  জেলায় ত্রিপুরা  জনগোষ্ঠির  লোক বিক্ষিপ্তভাবে  বাস  করেন। বিভিন্ন তথ্যসূত্র থেকে জানা যায়, ভারত ও বাংলাদেশ মিলে ত্রিপুরা জাতির জনসংখ্যা আনুমানিক ১২ লক্ষাধিক হবে। তার  মধ্যে শুধু  ভারতেই ১০ লক্ষ আর বাকি দুই লাখের অধিক বাংলাদেশে বসবাস  করে।

 

ত্রিপুরা জাতির ৩৬টি দফা বা গোত্রে বিভক্ত। এগুলো হলো: গুরপাই, রিয়াং, খালি, জমাতিয়া, নাইতং, কেওয়া, কেমা, দেনদাক, গাবিং, আসলং, তংপাই, আনোক, ফাতং, গর্জং, খাকুলু, কলই, মোকছাক, মুইচিং, উসুঁই, গাইগ্রা, বেরী, রুক্কিনী, মলসম, হারবাং, রংচের, বঙ, জানতং, চরই, দাম্পা, মংবাই, হালাম, কলি, মুরাসিং, মাখ্রা এবং মাইপালা।

 

তাদের এই ৩৬টি দফা বা গোত্রের মধ্য থেকে শুধুমাত্র উসুঁই এবং রিয়াং গোত্রের নারীদের ল্ক বা পুতির মালা গলায় পড়তে দেখা যায়। ধারণা করা হয়, উসুঁই এবং রিয়াং গোত্রের লোকজন এককালে একত্রে বসবাস করতেন। তারা বাংলাদেশের রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান জেলা আর ভারতের মিজোরামের কিছু অংশে বসবাস ছিল বলে উসুঁই সমাজের বয়স্কজনদের কাছ থেকে জানা যায়।

 

একসময় এই গোত্রের নারীরা একসময় ল্ক বা পুতির মালা অলঙ্কার হিসেবে খুব একটা ব্যবহার করত না। কিন্তু যখনই চ্বা বা ডাকাত পড়ত তখন নারীরাই বেশিরভাগ মারা যেত! কারণ, ডাকাত আসার টের পেয়ে গ্রামের পুরুষসহ অন্যান্যরা পালিয়ে যেতে পারলেও গর্ভবতী নারী এবং সদ্য সন্তান প্রসব করা প্রসূতি নারীরা পালাতে ব্যর্থ হত। আর তাদের গলা খালি থাকায় তলোয়ারের এক কোপে শরীর থেকে মস্তক বিচ্ছিন্ন হয়ে যেত আর এভাবে তাদের মেরে ফেলা হত। চ্বা বা ডাকাত দল মাঝেমধ্যে হঠাৎ করে ডাকাতি করার জন্য এসব ত্রিপুরা গ্রামে আসত। এসব ডাকাত দল ভারতের মিজোরাম থেকে আসত বলে প্রচলিত লোকগল্প থেকে জানা যায়। ত্রিপুরা ভাষায় মিজোদের লুংসই নামে ডাকা হত।

 

এ অবস্থায়, তাদের আত্মরক্ষার কথা ভেবে ল্ক বা পুতির মালা ব্যবহার প্রচলন শুরু হয়। এটি ব্যবহারের ফলে দেখা গেল যে, নারীরা কম মারা পড়ছে। কারণ, সারা গলায় পুতির মালা দিয়ে ঢেকে থাকায় ডাকাতরা সহজে তলোয়ার-দা দিয়ে গলা কাটতে পারতনা। পুঁতি বিশেষ একটা শক্ত কাঁচামাল দিয়ে তৈরি হওয়ায় ধারালো কিছু দিয়ে কাটলেও সহজে কাটা যেতই না বরং তলোয়ারের ধার কমে যেত। তাই তাদের আঘাত করে তাদের হাতিয়ার নষ্ট করতে চাইত না বলে এড়িয়ে যেত।

 

 

বান্দরবান ও রাঙ্গামাটি জেলার রাজস্থলী ও বিলাইছড়ি উপজেলায় গেলে দেখা মিলে পাহাড়ের অন্যান্য জাতিগোষ্ঠির পাশাপাশি ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বাসও। উল্লিখিত এসব এলাকা ছাড়াও ভারতের ত্রিপুরা ও মিজোরাম রাজ্যে উসুঁই গোত্রের লোকজন বাস করেন। এই সম্প্রদায়ের লোকেরা সাধারনত খাল-ঝিড়ির তীরে পাড়া বা গ্রাম স্থাপন করে থাকতে পচ্ছন্দ করে। এসব গ্রামের বয়স্ক নারীদের গলার দিকে লক্ষ্য করলে দেখবেন গলায় শত শত ল্ক বা পুতির মালা ঝুলছে। লাল-নীল-সবুজে ভরা বিভিন্ন রঙের ল্ক দেখা যায়। তবে, তার মধ্য থেকে সাদা-কালো-লাল দিয়ে বানানো পুতির মালার সংখ্যাই বেশি থাকে। একেকজনের গলায় একেক ওজনের পুতির মালা অলঙ্কার হিসেবে পড়ে থাকে। কেই বা এক কেজি কেউবা আবার এক কেজির বেশি গলায় অলঙ্কার হিসেবে পরিধান করে থাকে।

 

তবে, নব্বইয়ের দশকের পর থেকে পাহাড়ে ত্রিপুরার এসব গোত্রের নারীদের ল্ক বা পুঁতির মালার ব্যবহার অনেকাংশে কমেছে। পুরুষদের গলায় তো নেইই, এমনকি নারীদের গলায়ও খুব একটা সচরাচর দেখা মেলেনা এখন আর!গ্রামের ষাটোর্ধ্ব কিছু নারীদের গলায় এখন ল্ক নামক অলঙ্কার শোভা পেলেও এর নিচের বাকি সব বয়সের নারীরা ল্ক ব্যবহার আর করছেনা। এর কারণ হিসেবে তারা বলেন, দীর্ঘসময় ধরে এই মালা গাঁথা আর এর রক্ষণাবেক্ষণ করা কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তাছাড়াও, এটি গলায় পড়ে কোথাও গেলে (সমতল) সবার কাছে লজ্জার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কারণ, সবাই ঘিরে ধরে বিভিন্ন রকমের অযৌক্তিক প্রশ্নের সম্মূখীন হতে হয়, যা খুবই মানসিক অত্যাচার সামিল। তাই, এহেন এমন পরিস্থিতে লজ্বায় আর পড়তে নারাজ উসুঁই ত্রিপুরা নারীরা!

বাদুলা ত্রিপুরা, গণমাধ্যমকর্মী

সর্বশেষ - অন্যান্য

আপনার জন্য নির্বাচিত

ময়মনসিংহের বিভিন্ন স্থানে স্বেচ্ছাসেবক লীগের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ।

রেমিট্যান্স-যোদ্ধাদের তালিকা প্রকাশের সুপারিশ

খাগড়াছড়িতে ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে লক্ষ্মী-নারায়ণ মন্দিরের নতুন ভবনের নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন:

পছন্দ হয়নি কসমেটিকস, অভিমানে নববধূর আত্মহত্যা

প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ব্যাংকের শীর্ষপদে গোলাম আযমের মেয়ের জামাই এবং বিএনপি নেতা!

আলীকদমে বসতঘরসহ ধর্মীয় উপাসনালয় গীর্জা ভেঙ্গে দিলো – বন বিভাগ।

নোয়াখালীতে ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা নারী, প্রতিবাদ করায় পিটিয়ে জখম

শ্রীলঙ্কার সদস্যপদ স্থগিত করলো আইসিসি

টিকার জন্য হুমকির মুখে ভারত ছাড়লেন সেরাম সিইও

ঘোষণার আগেই ২০ টাকা বাড়তি তেলের দাম